ফের ২টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়ল উত্তর কোরিয়া
আবারও দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। স্থানীয় সময় রোববার (৯ অক্টোবর) ভোরে এই ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি নিক্ষেপ করে দেশটি। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এ নিয়ে সপ্তম বারের মতো এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল পিয়ংইয়ং।
এদিকে এই সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ফলে ওয়াশিংটন এবং টোকিওতে ব্যাপক শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
জাপানের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী তোশিরো ইনো সংবাদদাতাদের বলেন, রোববার নিক্ষেপ করা দু’টি ক্ষেপণাস্ত্রই ১০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল এবং সেগুলো ছিল ৩৫০ কিলোমিটার দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। প্রথমটি স্থানীয় সময় রাত ১টা ৪৭ মিনিটের দিকে এবং অপরটি তার প্রায় ছয় মিনিট পরে নিক্ষেপ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ভোরের আগে নিক্ষেপ করা এসব ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে পড়ে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ঠিক ধরনের তা খতিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বলেছে, ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি উৎক্ষেপণের পর মিত্র এবং অংশীদারদের সাথে তারা ঘনিষ্ঠভাবে পরামর্শ করছে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ‘অস্থিতিশীল প্রভাবকে’ তুলে ধরেছে তারা।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র বলছে, সর্বসাম্প্রতিক উৎক্ষেপণগুলো আমেরিকান কিংবা তাদের মিত্রদের জন্য কোনো হুমকির সৃষ্টি করেনি।
হাওয়াই-ভিত্তিক ইউএস ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কোরিয়া ও জাপান প্রজাতন্ত্রের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিগুলো এখনও কঠিন শক্ত আবরণে রয়ে গেছে।’
এর আগে গত মঙ্গলবার পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়া আগের চেয়ে অনেক দূর পাল্লার একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো জাপানের ওপর দিয়ে ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করে দেশটি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বরের পর এ নিয়ে সপ্তম বারের মতো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল উত্তর কোরিয়া। তোশিরো ইনো বলেন, টোকিও উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপ বারবার সহ্য করবে না।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বারবার ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক পরীক্ষাগুলো চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া। শনিবার দেশটি বলেছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো সরাসরি আমেরিকান সামরিক হুমকির বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য এবং এতে প্রতিবেশী দেশ ও অঞ্চলের নিরাপত্তার কোনো ক্ষতিসাধন হয়নি।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়া তার বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)-সহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। গত ২৫ মে বাইডেন পূর্ব এশিয়া ত্যাগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একে একে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিলেন কিম।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য দেশটির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ওয়াশিংটনের এই প্রস্তাবে ভেটো দেয় চীন ও রাশিয়া।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাত দফায় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং। উত্তর কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।
টিএম