ভারতের বাজারে পাকিস্তানের তৈরি রুহ আফজার বিক্রি বন্ধের নির্দেশ
ভারতের বাজারে পাকিস্তানি কোম্পানির তৈরি কোমল পানীয় রুহ আফজার বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে নয়াদিল্লির হাইকোর্ট। প্যাকেজিংয়ে রুহ আফজার বিষয়ে বিবরণ না থাকায় ভারতে পাকিস্তানের তৈরি রুহ আফজা বিক্রির এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
নয়াদিল্লির হাইকোর্ট বলেছে, মার্কিন ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন ভারতের বাজারে পাকিস্তানের তৈরি রুহ আফজা বিক্রি করতে পারবে না।
এই পানীয়টির ভারতীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানি হামদর্দ ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আদালতকে বলেছে, ভারতের ই-কমার্স সাইটে তালিকাভুক্ত কিছু ‘রুহ আফজা’ হামদর্দ ল্যাবরেটরিজের (ভারত) তৈরি নয়। বরং পাকিস্তানি কোম্পানির তৈরি রুহ আফজা ভারতের বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। আর এই পানীয়র ব্যাপারে প্যাকেজিংয়ে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে না।
হামদর্দ ন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির আদালত পাকিস্তানি রুহ আফজার বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
রুহ আফজা নামের কোমল এই পানীয় বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ও ফলের মিশ্রণে তৈরি হয়। ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন প্রদেশে সারা বছর, বিশেষ করে গরমের সময় এই পানীয়র চাহিদা তুমুল বেড়ে যায়। তবে পাকিস্তানে সাধারণত রমজান মাসে ইফতারের সময় এই পানীয় পান করা হয়। বাংলাদেশেও রমজান মাসে রুহ আফজার চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, হাকিম হাফিজ আব্দুল মজিদ নামের এক ভারতীয় নাগরিক ১৯০৭ সালে প্রথমবারের মতো পুরোনো দিল্লিতে রুহ আফজা বিক্রি করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের পর হাকিমের এক ছেলে দিল্লিতে থেকে যান এবং অপর এক ছেলে পাকিস্তানে পাড়ি জমান।
পরে প্রতিবেশী দুই দেশে ‘হামদর্দ ইন্ডিয়া’ এবং ‘হামদর্দ পাকিস্তান’ নামে দু’টি কোম্পানি চালু করেন তারা। তাদের প্রতিষ্ঠিত দুই কোম্পানি উভয় দেশে রুহ আফজার বাজারজাত শুরু করে।
হামদর্দ ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন এবং হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ ইন্ডিয়ার দিল্লি হাই কোর্টে জমা দেওয়া পিটিশনে বলা হয়েছে, মার্কিন ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজন আইন লঙ্ঘন করে ভারতের বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির রুহ আফজা বিক্রি করছে। এই পিটিশনের শুনানিতে নয়াদিল্লির হাই কোর্ট অ্যামাজনকে সতর্ক করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের বাজারে পাকিস্তানের তৈরি কোনও কোম্পানির রুহ আফজা বিক্রি করা যাবে না বলে অ্যামাজনকে জানিয়ে দিয়েছে।
তবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বলে দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়েছে। একই সঙ্গে আগামী এক মাসের মধ্যে অ্যামাজনকে তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে জমার নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এসএস