পানিবিহীন টয়লেট উদ্ভাবন: মলকে বানাবে ছাই
পরিবেশ দূষণ ও পানির অপচয় রোধে বিশেষ ধরনের প্রযুক্তিসম্পন্ন ‘পানিবিহীন টয়লেট’ (ওয়াটারলেস টয়লেট) প্রস্তুত করেছে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি স্যামসাং। আর এই প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করেছে মার্কিন ধনকুবের বিল গেটস ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস গঠিত অলাভজনক সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
ওয়াটারলেস টয়লেটে পানির কোনো ব্যবহার নেই। মলত্যাগ করা হলে এটির সঙ্গে সংযুক্ত উচ্চমাত্রার তাপ প্রযুক্তি সেটিকে প্রথমে শুকিয়ে এবং তারপর পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে। তরল বর্জ্য বা মূত্রকে বিশুদ্ধ ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়াও রয়েছে টয়লেটটিতে। মলকে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা এবং মূত্রকে বিশুদ্ধ পানিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়াটি ঘটে স্বল্প সময়ের মধ্যে।
২০১১ সালে এই ওয়াটারলেস টয়লেট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। ইতোমধ্যে সেটি শেষ হয়েছে।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই প্রকল্প সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘১৫৯৬ সালে ব্রিটিশ প্রযুক্তিবিদ ও আবিষ্কারক স্যার জন হ্যারিংটন ফ্ল্যাশ টয়লেট আবিষ্কার করেছিলেন। তার পর থেকে গত প্রায় সাড়ে ৪০০ বছরে টয়লেটের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
‘এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো মনুষ্যবর্জ্য প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়া ও তা সৃষ্ট রোগ-জীবাণুর আক্রমণ থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা। যেসব দেশে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সংখ্যা বেশি, সেসব অঞ্চলে পানিবাহিত রোগবালাই রোধে এই টয়লেট খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’
‘তাছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সুপেয় পানির সংকট চলছে, আবার ফ্ল্যাশ টয়লেটের কারণে বিপুল পরিমাণ পানি অপচয়ও হচ্ছে। পানির অপচয় রোধেও এটি উপযোগী।’
জাতিসংঘের শিশু অধিকার ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩৬০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যকর পয়োনিষ্কাশন বা টয়লেট সুবিধাবঞ্চিত। উন্মুক্ত পরিবেশে মলমূত্র ত্যাগের কারণে ডায়রিয়া ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে মারা যায় অন্তত ৫ লাখ শিশু।
সূত্র : এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ