ইন্দোনেশিয়ায় পরপর তিনটি ভূমিকম্পের আঘাত
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তবে এতে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভূমিকম্পে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের পশ্চিম উপকূল কেঁপে উঠেছে। দেশটির ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার সকালের দিকে অন্তত তিনবার ওই উপকূলে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভূ-পদার্থবিদ্যা সংস্থা (বিএমকেজি) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের একটু আগে সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলীয় মেনতাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের গভীরে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হলেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি।
বিএমকেজির একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রাথমিকভাবে সংস্থাটি ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে রেকর্ড করলেও পরে তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ মাত্রা জানায়।
সোমবার ভোর থেকে পরপর ক্রমবর্ধমান তীব্র তিনটি ভূমিকম্প ওই এলাকায় আঘাত হেনেছে। ভোরের দিকে আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২। এর এক ঘণ্টারও কম সময় পর ৫ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এই সংস্থার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুমাত্রার প্রাদেশিক রাজধানী পাদাংয়ের মেনতাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা কয়েক সেকেন্ড ধরে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। প্রাদেশিক রাজধানীর পাশাপাশি বুকিতিংগির পার্বত্য অঞ্চলে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১।
সংস্থাটি বলেছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সাইবারুত দ্বীপে কিছু ভবনের সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মেনতাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নোভরিয়াদি রয়টার্সকে বলেছেন, ভূমিকম্প কবলিত এলাকার কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পে স্থানীয় একটি গির্জা, স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা স্থাপনার হালকা ক্ষতি হয়েছে।
সেখানকার স্থানীয় জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএমকেজি। একই সঙ্গে ভূমিকম্প পরবর্তী আফটারশকের সম্ভাবনা রয়েছে বলে বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হন আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়।
প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে।
২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস