গমের আটা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের
অভ্যন্তরীণ বাজারে ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ন্ত্রণ ও দেশের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গমের আটা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন গমের আটা রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপিত হবে। এর ফলে গমের আটার ক্রমবর্ধমান দামের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। মন্ত্রিপরিষদের বিবৃতি অনুযায়ী, ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।
বিশ্বজুড়ে গমের প্রধান রপ্তানিকারক দুটি দেশ হলো রাশিয়া এবং ইউক্রেন। বিশ্ববাজারে গম বাণিজ্যের প্রায় এক-চতুর্থাংশই আসে ওই দুটি দেশ থেকে। গত ছয় মাস ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী গমের সরবরাহ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। যে কারণে বিশ্বজুড়ে ভারতীয় গমের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও গমের দাম বেড়েছে।
ভারতের ১৪০ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত মে মাসে গম রপ্তানি বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। পরে বিশ্ববাজারে গমের আটার চাহিদাও ব্যাপক বেড়ে যায়। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে ভারত থেকে গমের আটার চালান প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে গমের আটার চাহিদা বৃদ্ধিতে দেশটির বাজারেও এর দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের সরকার চলতি বছরে রেকর্ড ১১১ মিলিয়ন টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সরকারের এই পূর্বাভাসের পর বিশাল পরিমাণ গম রপ্তানির আশা করা হয়েছিল। কিন্তু গত মার্চ-এপ্রিলের দিকে দেশটিতে তীব্র তাপদাহ বয়ে যায়। যে কারণে শীতকালীন প্রধান এই খাদ্যশস্যের উৎপাদনের পূর্বাভাস ৫ শতাংশ হ্রাস করতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর বিশ্বজুড়ে গমের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের অনেক আমদানিকারক দেশ এই খাদ্যশস্যের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে।
সূত্র: লাইভ মিন্ট, রয়টার্স।
এসএস