আর ডলারের প্রয়োজন নেই ভারত-রাশিয়ার : ব্রিকস
প্রভাবশালী বৈশ্বিক জোট ব্রিকসের দুই সদস্য ভারত ও রাশিয়া এখন থেকে ডলারের পরিবর্তে রুপি ও রুবলে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য করবে। ব্রিকসের প্রেসিডেন্ট পূর্ণিমা আনন্দ বুধবার চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ে সংস্থাটির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পূর্ণিমা আনন্দ বলেন, ‘সংস্থার দুই সদস্য রাষ্ট্র ভারত ও রাশিয়া এখন থেকে পরস্পরের মধ্যকার বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে নিজেদের মুদ্রা রুপি ও রুবল ব্যবহার করবে। এ বিষয়ে দুই দেশের সরকার সমঝোতায় পৌঁছেছে।’
‘এছাড়া (সংস্থার) অপর সদস্য চীনের সঙ্গেও ডলারের পরিবর্তে ইউয়ান ও রুবল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন— এই চারটি দেশের ইংরেজি বানানের আদ্যক্ষর দিয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয় অর্থনৈতিক ও আন্তঃসরকার সংস্থা ব্রিক। পরে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ দেওয়ার পর সংস্থাটির নাম হয় ব্রিকস। সদস্য ৫ রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানরা এ সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করেন।
চলতি বছর ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর জেরে রাশিয়ার ওপর একরাশ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এসব নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডলার সংগ্রহে সমস্যায় পড়েছে রাশিয়া।
এই সমস্যা সমাধান ও নিজেদের অর্থনৈতিক ভারসাম্য স্থিতিশীল রাখতে গত মার্চে মস্কো ঘোষণা দেয়— এখন থেকে অন্যান্য দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ডলারের পরিবর্তে রুশ মুদ্রা রুবল ব্যবহৃত হবে। অর্থাৎ, যেসব রাষ্ট্র রাশিয়া থেকে পণ্য কিনবে, সেই পণ্যের দাম পরিশোধ করতে হবে রুবলে।
রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশ। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপের বাজারে রাশিয়ার তেলের সরবরাহ কমে গেছে।
কিন্তু একই সময়ে ব্রিকসের দুই সদস্য রাষ্ট্র চীন ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য রীতিমতো ফুলে-ফেঁপে উঠেছে দেশটির। দু’টি দেশই রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করছে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ব্রিকস প্রেসিডেন্ট জানান, রাশিয়া ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য গত ছয় মাসে ৫গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং ভেঙে দিয়েছে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যের গত ৪০ বছরের রেকর্ড।
রাশিয়া থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে তেল কিনছে ভারত। আর ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য, কাপড়, ওষুধ ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করছে রাশিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে পূর্ণিমা আনন্দ বলেন, ‘ব্রিকস সদস্যরা রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে রুশ অর্থনীতিতে যে সংকটের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল, তা মোকাবিলায় রাশিয়াকে নতুন পথের দিশা দিচ্ছে ব্রিকস।
সূত্র : আরটি।
এসএমডব্লিউ