নাগরিকত্ব না পেয়ে ভারত থেকে ফিরছেন পাক হিন্দু শরণার্থীরা
আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অর্থনৈতিক কারণে নাগরিকত্বের আবেদন করতে না পেরে অবশেষে পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছেন অনেক হিন্দু শরণার্থী, যারা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে টিকতে না পেরে ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসে ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সংস্থা সীমান্ত লোক সংগঠনের প্রেসিডেন্ট হিন্দু সিং সোধা ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন এ তথ্য।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সোধা বলেন, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে পাকিস্তান থেকে প্রায় ২৫ হাজার হিন্দু শরণার্থী ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী পাঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন, এবং তাদের প্রায় সবাই ভারতের নাগরিকত্বের জন্য দেশটির সরকারের কাছে আবেদনও করেছেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৩ হাজার শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দিয়েছে ভারতের সরকার। কিন্তু তারপর গত ৫ বছরে মাত্র ২০০০ শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
‘ভারতের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বাইরের দেশের কোনো হিন্দু নাগরিক যদি নিজ দেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন—সেক্ষেত্রে তাকে ভারতের পাসপোর্ট নিতে হবে এবং এক্ষেত্রে তিনি যে দেশ থেকে এসেছেন সেই দেশের দূতাবাসের একটি শংসাপত্র আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হয়।’
‘২০১৭ সালের আগ পর্যন্ত যেসব হিন্দু শরণার্থী ভারতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন, তারা পাকিস্তান দূতাবাস থেকে সহজেই শংসাপত্র পেতেন, সেজন্য তাদের কোনো ব্যয় হতো না; কিন্তু ওই বছর থেকে পাকিস্তান দূতাবাস নিয়ম জারি করে, শংসাপত্র পেতে হলে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার রুপি ব্যয় করতে হবে।’
‘এছাড়া নাগরিকত্বের আবেদনের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় অর্থব্যায়ের পরিমাণও বেড়েছে। ফলে শিবিরে যেসব দরিদ্র শরণার্থী আছেন, অর্থের অভাবে আবেদন করতে না পেরে তারা পাকিস্তানে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।’
গত ২০২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ শ’ শরণার্থী পাকিস্তানে ফিরে গেছেন উল্লেখ করে সোধা আরও বলেন, ‘অর্থের অভাবে নাগরিকত্বের আবেদন করতে না পারা এবং উপায় না থাকায় পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার এই বিষয়টি বিভিন্ন ক্যাম্পে হতাশা তৈরি করছে। নিরাপদে বেঁচে থাকতে যে দুর্যোগকে তারা পেছনে ফেলে এসেছিলেন, আবার সেই দুর্যোগের মধ্যেই পড়তে হচ্ছে তাদের।’
এ ব্যাপারে ভারতের সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, সরকারের উচিত শরণার্থীরা যেন সহজে নাগরিকত্ব পায় সে বিষয়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এসএমডব্লিউ