বিলাসজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলছে পাকিস্তান
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে বিলাসজাত পণ্য আমদানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।
তবে আমদানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও আমদানি করা প্রতিটি বিলাসজাত পণ্যের ওপর বিপুল পরিমাণ শুল্ক জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
দেশের অর্থনীতির ওপর থেকে চাপ কমানো ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা করতে গত ১৯ মে ‘অপরিহার্য নয়’ এমন বিলাসজাত পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল পাকিস্তানের সরকার। নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল গাড়ি, মোবাইল ফোন, সিগারেটসহ ৩৮টি পণ্য।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে সেই নিষেধাজ্ঞার কারণ ব্যাখ্যা করে মিফতাহ ইসমাইল বলেন, ‘যখন আমাদের ডলারের টানাটানি চলছিল, সে সময় সঙ্গত কারণেই আমরা জরুরি পণ্যের আমদানিতে প্রাধান্য দিয়েছিলাম। গাড়ি এবং গম— এই দুইয়ের মধ্যে যে কোনো একটিকে আমাদের বেছে নেওয়া প্রয়োজন ছিল এবং আমরা গম আমদানিকে গুরুত্ব দিয়েছি, গাড়ি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি।
আইএমএফের পরামর্শে সরকার আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে উল্লেখ করে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আমদানি করা বিলাসজাত পণ্যের ওপর বিপুল পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।’
‘উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো গাড়ি আমদানি করতে চায়, যেটির দাম ৬ কোটি রুপি— সেক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই ওই ব্যক্তিকে গাড়ির শুল্ক বাবদ ৩০ থেকে ৪০ কোটি রুপি প্রদান করতে পারার মতো ক্ষমতা থাকতে হবে। কেবল তাহলেই তাকে সেই গাড়ি আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।’
‘কারণ, আমার কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ডলার নেই। এ অবস্থায় আমি যৌক্তিকভাবেই গাড়ি কিংবা আইফোনের পরিবর্তে তুলা, ভোজ্য তেল ও গম আমদানিকে গুরুত্ব দেবো।
‘সরকারের একক সিদ্ধান্তেই যে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে— এমন নয়। আপনারা জানেন, আইএমএফের কাছে আমরা ঋণের আবেদন করেছি এবং সংস্থাটি আমাদের যেসব পরামর্শ দিয়েছে তার আওতায়ই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইএমএফের পরামর্শ না মানলে ঋণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’
সম্প্রতি আইএমএফ বরাবর ৪০০ কোটি ডলার ঋণের জন্য আবেদন করেছে পাকিস্তান। তার মধ্যে ১১৭ কোটি ডলার জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে এতদিন বিভিন্ন কারণে পাকিস্তারে সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে বড় কোনো বৈঠক হয়নি।
মিফতাহ ইসমাইল বলেন, ‘আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠকের সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে। আগামী ২৯ জুলাই হবে এ বৈঠক।’