রুশদির হামলাকারী কে এই হাদি?
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার এক দশক পরে তার জন্ম। আর ১৯৮৮ সালে সেই বিতর্কিত বই লেখার ‘অপরাধে’ শুক্রবার ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখকের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালান নিউ জার্সির ২৪ বছরের যুবক হাদি মাতার।
প্রাথমিক তদন্তে নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানতে পেরেছে, হাদি শিয়া সম্প্রদায়ের। জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায় হলেও তিনি ইরানি বংশোদ্ভূত। শিয়া কট্টরপন্থায় বিশ্বাসী হাদির আনুগত্য রয়েছে ইরানের ‘ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড’র প্রতি। তবে তিনি সরাসরি কোনও কট্টরপন্থী সংগঠনের সদস্য কিনা, তা এখনও জানা যায়নি।
বিতর্কিত উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ লেখার পর ১৯৮৯ সালে রুশদিকে খুনের ফতোয়া জারি করেছিলেন ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা খোমেইনি।
নিউইয়র্ক পুলিশের ধারণা, একাই হামলা চালিয়ে রুশদিকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন হাদি মাতার। তা কার্যকর করার দায়িত্বও একাই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। রুশদির অনুষ্ঠানের প্রবেশপত্র তিনি কীভাবে জোগাড় করেছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। উদ্ধার প্রবেশপত্রটি ছিল ফেয়ারভিউর একটি ঠিকানার। ম্যানহাটন থেকে হাডসন নদী পেরিয়ে ওই ছোট শহরের হাদির সর্বশেষ ঠিকানা ছিল বলে পুলিশের দাবি।
শুক্রবার রাতে হাদির ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাসংস্থা এফবিআই। পরে সেখান থেকে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। হাদি ভুয়া নথিপত্রের সাহায্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছিলেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
নিউইয়র্কে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে শুক্রবার রুশদির ওপর হামলা হয়। হামলার পর পুলিশ হাদি মাতার নামে ২৪ বছর বয়সী ওই যুবককে আটক করেছে। নিউইয়র্ক পুলিশ বলছে, ওই যুবক অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে উঠে সালমান রুশদিকে কোপাতে শুরু করে। মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যে ১০-১৫ বার কোপানো হয় রুশদিকে।
তার এজেন্ট বলছেন, সালমান সম্ভবত একটি চোখ হারাবেন; তার হাতের স্নায়ুগুলো বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং লিভারও ক্ষত হয়েছে। তবে কেন বা কী উদ্দেশ্য নিয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি পুলিশ। অনুষ্ঠানস্থলে পাওয়া একটি ব্যাকপ্যাক ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষা করছে পুলিশ।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে রুশদির গলায় ও পেটে অন্তত একটি করে আঘাত রয়েছে। হামলার পর তাকে হেলিকপ্টারে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এসএস