অর্থনৈতিক সংকট: সিয়েরা লিওনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ঠেকাতে কারফিউ
ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি আর জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত সিয়েরা লিওনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সহিংসতা দেখা দিয়েছে। চলমান এই সহিংসতার লাগাম টানতে সিয়েরা লিওনের ক্ষমতাসীন সরকার দেশজুড়ে কারফিউ করেছে। রাজধানী ফ্রিটাউনে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের একদিন পর দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও একজন বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে।
এর আগে বুধবার সিয়েরা লিওনের সরকার বলেছিল, অর্থনৈতিক সংকট ও অন্যান্য সমস্যার প্রতিবাদে দেশের হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ থেকে রাস্তায় ঢিল ছুঁড়েছেন এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়েছেন। সেসময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই বিষয়ে কোনও পরিসংখ্যান জানায়নি দেশটির সরকার। বুধবার ফ্রিটাউনের প্রধান মর্গের কর্মীরা বলেছেন, সেখানে তিনজনের মরদেহ রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মুদ্রাস্ফীতি এবং জ্বালানি সংকটে রীতিমতো লড়াই করছে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি। সহিংসতা ঠেকাতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছে সিয়েরা লিওনের ক্ষমতাসীন সরকার।
টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো বলেছেন, ‘দেশের প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। আজ যা ঘটেছে তা দুঃখজনক এবং পুরো ঘটনা তদন্ত করা হবে।’
ফ্রিটাউনের মর্গে তিনজনের মরদেহ রয়েছে বলে সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছেন। তবে রয়টার্সের একজন প্রতিনিধি ফ্রিটাউনের পূর্বাঞ্চলের একটি সড়কে বেসামরিক এক নাগরিকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন। এই বিষয়ে দেশটির পুলিশের প্রধান এবং মুখপাত্রের মন্তব্য জানা যায়নি।
রয়টার্স নিরপেক্ষ যাচাই-বাছাইয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা ভিডিওতে দেখেছে, রাজধানী ফ্রিটাউনে প্রচুর মানুষের সমাগম রয়েছে এবং সেখানকার রাস্তায় জ্বলন্ত টায়ারের স্তুপ পড়ে আছে। অন্যান্য ফুটেজে একদল যুবককে সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়া রাস্তায় পাথর ছুঁড়তে দেখা যায়।
দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ড্যানিয়েল আলফা কামারা। তিনি বলেন, লোকজন দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বিচলিত। এছাড়া প্রত্যেকদিন জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও বাড়ছে।
এর আগে বুধবার, ইন্টারনেট পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নেটব্লকস বলেছিল, বিক্ষোভ চলাকালীন একেবারে পুরোপুরি ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হয়েছিল সিয়েরা লিওন। সাধারণ সময়ের তুলনায় ইন্টারনেট সংযোগের হার সেই সময় ৫ শতাংশে নেমে আসে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস