১টা কিনলে ২টা ফ্রি, ঘণ্টাখানেকেই ফাঁকা দিল্লির মদের দোকান
দিনটা যে সাপ্তাহিক ছুটির রোববার ছিল, তা দেখে বলার উপায় নেই। সকাল থেকেই লম্বা লাইন দোকানের সামনে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন, তবুও লাইন থেকে একচুল নড়তে নারাজ সবাই। অবশ্য এটি রেশন দোকান বা খাসির মাংসের দোকানের লাইন নয়।
এই লাইন ছিল মদের দোকানে। রোববার ঘুম ভাঙতেই মদ্যপানীয় প্রেমিকরা হাজির হয়েছিলেন কাছের মদের দোকানে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে কিনলেন পছন্দসই মদ। কেউ কেউ আবার গোটা বাক্স তুলে নিয়ে গেলেন। সকলের মনেই ভয়, কাল থেকে যদি আর মদ না পাওয়া যায়!
মদ বিক্রির নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু হতেই, উল্টোপথে হেঁটেছে ভারতের দিল্লি রাজ্যের ক্ষমতাসীন অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার। রাতারাতি নির্দেশ দেওয়া হয় যে, ১ আগস্ট থেকে ফের পুরোনো মদ বিক্রির নীতিই কার্যকর হবে। যেসব বেসরকারি মদের দোকানের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সরকারের এই ঘোষণার পর থেকেই বিগত কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে ব্যাপক হারে বিক্রি বেড়েছে মদের। তবে রোববার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লকডাউন ওঠার পর ঠিক যেরকম কয়েক কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়েছিল, একইভাবে গতকালও দিল্লির একাধিক প্রান্তে সেই একই চিত্র ধরা পড়ে।
দিল্লির নতুন মদ নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন লেফটেন্য়ান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। গোটা বিষয়ে তদন্তের নির্দেশও দেন আবগারি দপ্তরকে। এরপরই শনিবার দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে পুরোনো আবগারি নীতিই ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদমাধ্যম বলছে, দিল্লির প্রায় ৪৬৮টি মদের দোকানের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয় ৩১ জুলাই। দোকানের লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় আগেভাগেই যাবতীয় স্টক ফাঁকা করে নিয়েছেন দোকানদাররা।
আর তাই একাধিক দোকানের বাইরেই স্টকে থাকা মদের চার্টের পাশাপাশি, একটা কিনলে একটা ফ্রি, বা একটা কিনলে দু’টি ফ্রি-র মতো অফার দেওয়া হয়। এ কারণেই ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই দোকানগুলোর অধিকাংশ মদ শেষ হয়ে যায়। তবে অধিকাংশ দোকানেই মদের দাম বাকিদিনের তুলনায় অনেকটা কম ছিল বলেই জানিয়েছেন ক্রেতারা।
দিল্লির লক্ষ্মীনগরের একটি মদের দোকানের ম্যানেজার বলেন, ‘সকাল থেকেই প্রচুর বিক্রি হয়েছে। শেষ কিছু মদ ও বিয়ার পড়ে রয়েছে। ক্রেতারা এসে যা পাচ্ছেন, তাই-ই কিনে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। যারা নিজেদের পছন্দমতো ব্রান্ড খুঁজছেন, তাদের খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে।’
অবশ্য শুধু দিল্লিই নয়, আশেপাশের নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ থেকেও ক্রেতারা মদ কিনতে রোববার ভারতের রাজধানীতে এসেছিলেন।
টিএম