এক মাসে বিদ্যুৎ বিল ৩৪১৯ কোটি টাকা, হাসপাতালে ভর্তি গ্রাহক
বিদ্যুৎ বিতরণ বা সেবায় নিযুক্ত সংস্থাগুলো বেশি ইলেকট্রিসিটি বিল পাঠাচ্ছে বলে অনেক সময়ই অভিযোগ শোনা যায়। তবে বিল বেশি পাঠালেও তার পরিমাণ হতে পারে সর্বাধিক এক হাজার বা দুই হাজার টাকা। কিন্তু টাকার অংকটা যদি লাখ বা কোটিতে পৌঁছায়?
শুনকে অবাক লাগলেও এবার তেমনই এক ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ বিলে শূন্যের সংখ্যাটা গুণতে গুণতেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক ব্যক্তি। বাধ্য হয়ে তাকে ভর্তি করাতে হলো হাসপাতালে। ওই পরিবারের বিদ্যুৎ বিল এসেছিল ৩ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা! বুধবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজারও কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল আসার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে। রাজ্যটির গোয়ালিয়রে প্রিয়াঙ্কা গুপ্তা নামক এক নারীর নামেই এই বিপুল অংকের বিদ্যুতের বিল আসে, যা দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন তার শ্বশুর। ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, গোয়ালিয়রের শিব বিহার কলোনির বাসিন্দা ওই মধ্যবিত্ত পরিবার চলতি জুলাই মাসের বিদ্যুতের বিল দেখেই যেন বিদ্যুতের শক খায়। দেখা যায়, বিলে বড় বড় করে লেখা, বিদ্যুৎ ব্যবহারের বকেয়া অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।
গত ২০ জুলাই হাতে পাওয়া ওই বিদ্যুতের বিল নিয়ে মধ্যপ্রদেশের মধ্য ক্ষেত্র বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির পোর্টালে গিয়েও বিলের অংক মিলিয়ে দেখা হয়। সেখানেও দেখা যায়, ওই পরিবারের ৩ হাজার ৪১৯ কোটি টাকাই বিল হয়েছে। এতো টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে এই ভেবেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রিয়াঙ্কা গুপ্তার স্বামী সঞ্জীব কানকানের বাবা।
পরে রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগীরা। এরপর সেই বিল সংশোধন করে জানানো হয়, তাদের আসল বকেয়া বিল হলো ১ হাজার ৩০০ টাকা। এদিকে, ততক্ষণে বিদ্যুতের বিলের চিন্তায় অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।
প্রিয়াঙ্কা গুপ্তার স্বামী সঞ্জীব কানকানে বলেছেন, তাদের বাড়িতে জুলাই মাসের বিদ্যুৎ বিলের বিশাল অংক দেখে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মধ্যপ্রদেশের মধ্য ক্ষেত্র বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার নিতীন মাঙ্গলিক জানান, তাদের অফিসের এক কর্মীর ভুলের কারণেই এই বিশাল অংকের বিল পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিল তৈরির সময় এক কর্মী ভুল করে ইউনিট কনজিউমের জায়গায় কনজিউমার নাম্বার বসিয়ে দেয়। যার জেরে টাকার অংক বিপুল পরিমাণে বেড়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে ওই গ্রাহককে ১৩০০ টাকার নতুন বিল পাঠানো হয়েছে।’
এই ঘটনা সম্পর্কে মধ্য প্রদেশের জ্বালানিমন্ত্রী প্রদ্যুমান সিং তোমার বলেন, ভুল সংশোধন করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত ওই কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে।
টিএম