রুশ সেনাদের অবস্থান জানতে নাগরিকদের দ্বারস্থ ইউক্রেন
ইউক্রেনে রাশিয়ার চলমান সামরিক অভিযান গড়িয়েছে পাঁচ মাসে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই আগ্রাসনে ইউক্রেন কার্যত বিপর্যস্ত। পশ্চিমা অস্ত্রও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেশটিকে খুব বেশি সহায়তা দিতে পারছে না।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান জানতে নাগরিকদের দ্বারস্থ হয়েছে ইউক্রেন। রোববার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নাগরিকদের কাছে মস্কোর সৈন্যরা কোথায় বাস করছে এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে কারা দখলকারীদেরকে সহযোগিতা করছে তা প্রকাশ করার জন্য শনিবার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের দেওয়া ওই বিবৃতিতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এনারহোদার এবং আশেপাশের লোকদের লক্ষ্য করে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় এই শহরটিতে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির একটি প্রধান পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।
রয়টার্স বলছে, শনিবার দেওয়া ওই বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘দয়া করে জরুরিভিত্তিতে দখলদার সৈন্যদের ঘাঁটি এবং তাদের আবাসিক ঠিকানা ... এবং কমান্ডিং স্টাফদের আবাসস্থলের সঠিক অবস্থান আমাদেরকে জানান।’
এমনকি স্থানীয় ইউক্রেনীয়দের মধ্যে কারা রুশ সেনাদের সহযোগিতা করছে সেটিরও বিস্তারিত বিবরণ জানানোর আহ্বান জানিয়েছে কিয়েভ। একইসঙ্গে ইউক্রেনীয়দের মধ্যে কারা রুশ সেনাদের সঙ্গে বসবাস ও কাজ করছে এবং দখলকারীদের প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ ব্যক্তিদেরও ঠিকানা জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে সামরিক অভিযান শুরুর পর গত মার্চের শুরুতে এনারহোদার শহর দখল করে রাশিয়া। এরপর গত মে মাসে শহরটিতে রাশিয়া-নিযুক্ত প্রধান একটি বিস্ফোরণে আহত হন। ক্রেমলিন সেটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছিল।
এছাড়া গত জুন মাসে দক্ষিণ খেরসন অঞ্চলে একজন রুশপন্থি কর্মকর্তা একটি বিস্ফোরণে নিহত হন বলে রুশ বার্তাসংস্থা আরআইএ জানিয়েছিল। একই মাসের শুরুতে ওই অঞ্চলের পেনাল সার্ভিসের প্রধানকে তার গাড়ির কাছে বোমা বিস্ফোরণের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
এদিকে টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে ইউক্রেনের ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট এনারহোদারে রাশিয়ান সামরিক সরঞ্জামগুলো যেসেব রুট ব্যবহার করছে সেগুলোও জানাতে নাগরিকদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার বিষয়ে তথ্য জানাতে নাগরিকরা হয় কল করতে পারে বা হোয়াটসঅ্যাপ বা সিগন্যাল ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে তাদের তথ্য সরবরাহ করতে পারে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আসুন, একসঙ্গে দখলদারদের আমাদের মাতৃভূমি থেকে তাড়িয়ে দেই!’
রয়টার্স বলছে, যুদ্ধ-পূর্ব এনারহোদার শহরের জনসংখ্যা ছিল ৫০ হাজারেরও বেশি। অনেক বাসিন্দা শহরের কাছাকাছি দু’টি পাওয়ার প্ল্যান্টে কাজ করে থাকেন। যার মধ্যে একটি হচ্ছে জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যা ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
টিএম