শস্য চুক্তির কয়েক ঘণ্টা যেতে না যেতেই ওডেসা বন্দরে রুশ হামলা
ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি পুনরায় শুরুর যুগান্তকারী এক চুক্তিতে পৌঁছানোর ঠিক একদিন পরই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ওডেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী বলেছে, শনিবার ভোরের দিকে ওডেসা বন্দরে অন্তত দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে।
শুক্রবারের চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কৃষ্ণসাগর হয়ে যেসব জাহাজ ইউক্রেনের শস্য পরিবহন করবে, সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাবে না রাশিয়া। কয়েক মাস ধরে চলমান রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের পর জাতিসংঘ এই চুক্তিকে ‘আশার আলো’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড সেন্টার বলেছে, ওডেসা বন্দরে রাশিয়ার ছোড়া দুটি কালিব্র ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এছাড়া আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য অলেক্সি হোনচারেনকো টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘হামলার পর শহরের বন্দরে আগুন ধরে গেছে। এই ঘৃণিত ব্যক্তিরা এক হাতে চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং অন্য হাতে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র।’
‘যে কারণে আমাদের উড়োজাহাজ দরকার। রাশিয়ান ফেডারেশনের পুরো কৃষ্ণ সাগরের নৌবহরকে ডুবিয়ে দিতে হবে। শস্য রপ্তানির জন্য এটাই হবে সর্বোত্তম ব্যবস্থা।’
তবে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওডেসা বন্দরে কোনও হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা তা পরিষ্কার নয়।
এর আগে, শুক্রবার কিয়েভ এবং মস্কোর কর্মকর্তারা ইউক্রেনে আটকা আড়াই কোটি টন গম ও ভুট্টা যাতে বিশ্ববাজারে সরবরাহ করা যায়, সেলক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকে থাকা শস্য বহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সেজন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হবে। সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে জাতিসংঘ, রাশিয়া ও তুরস্ক।
কূটনীতিকদের মতে, চুক্তিতে ট্রানজিটে থাকাকালীন কোনও চালান অথবা বন্দরগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে না বলে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া। অন্যদিকে, ইউক্রেন মাইন পেতে রাখা সাগর দিয়ে কার্গো জাহাজ পরিবহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই চুক্তিতে পৌঁছাতে সময়ে লেগেছে প্রায় দুই মাস, আর এই চুক্তির স্থায়িত্ব হবে ১২০ দিন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রি ইয়ারমাক এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রাশিয়া বিশ্বজুড়ে ‘পরিকল্পিতভাবে খাদ্য সংকট তৈরি করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসএস