পশ্চিমবঙ্গে অ্যাসিড পোকার আতঙ্ক, গায়ে লাগলেই পুড়ে যাচ্ছে চামড়া
নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড পোকা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আতঙ্কের নতুন নাম। এদের ইংরেজি নাম রোভ বিটল। এরা কামড়ায় না, হুলও ফোটায় না। কিন্তু এই অ্যাসিড পোকা গায়ে বসলেই পুড়ে যায় চামড়া।
অ্যাসিড পোকার আতঙ্কে ভুগছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের পাহাড় থেকে সমতলের মানুষ। রাজ্যের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের বহু শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, পোকাটির শরীরের রয়েছে ‘পিডেরিন’ নামক এক রাসায়নিক। হুল ফোটালে তা মানুষের ত্বকের সংস্পর্শে এসে অ্যাসিডে পোড়ার মতো ক্ষতের সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয় ক্ষতস্থানের সঙ্গে ত্বকের সুস্থ অংশের স্পর্শ লাগলে সেখানেও পোড়া দাগ তৈরি হতে পারে। এমনকি পোকার বিষ চোখে লাগলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।
অ্যাসিড পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কী? প্রশাসন থেকে পোকা মারার কোনো ওষুধের ব্যবস্থা না হলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সাবধানে থাকার। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা, সন্ধ্যার আগেই দরজা-জানালা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ঘরের বাইরে আলো জ্বালিয়ে ভেতরে আলো নিভিয়ে রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঘুমনোর সময় অবশ্যই মশারি খাটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এই পোকার প্রাদুর্ভাব প্রথম দেখা গিয়েছিল পূর্ব আফ্রিকার দেশ নাইরোবিতে। তবে শুধু আফ্রিকা নয় তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্সের মতো বেশ কিছু দেশেও এদের দেখা মেলে। এ পোকাটি এতই ছোট যে খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘুম থেকেই উঠেই টের পাওয়া যায় চোখের পাশ বা মুখের কোনো অংশ লাল হয়ে ফুলে গেছে। শরীরের যেকোনো অংশ এই পোকার দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
অ্যাসিড পোকা কামড়ায় না বা হুল ফোটায় না। অসাবধানতাবশত পোকার গায়ে ঘষা লাগলে বা চাপ দিলে তার শরীর থেকে যে রাসায়নিক বের হয়, তা মানুষের ত্বকের সংস্পর্শে এসে পুড়িয়ে নষ্ট করে দেয়। সাধারণত ঘুমের মধ্যেই এই ভুল করে থাকেন অনেকেই।
ওএফ