ভারতের মানবহীন যুদ্ধবিমান: কী এর বিশেষত্ব?
অটোনোমাস ফ্লাইং উইং টেকনোলজি ডেমোনস্ট্রেটরের প্রথম ফ্লাইটের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জে বিমানটির পরীক্ষা করা হয়। বিমানটি মূলত ড্রোনের উন্নত রূপ, যা ভবিষ্যতের যুদ্ধে অনেক প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, যুদ্ধে মানবহীন বিমানের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। এই বিমানটি সেই লক্ষ্যে এক বড় পদক্ষেপ। মানবহীন যুদ্ধবিমান পরীক্ষার মাধ্যমে কৌশলগত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির স্বনির্ভরতায় ভারত এক মাইলফলক স্পর্শ করল।
ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) জানিয়েছে, সম্পূর্ণ স্বনিয়ন্ত্রিত রূপে পরিচালিত এই মানবহীন যুদ্ধবিমান নির্ভুল সময়সীমা মেনে উড়তে পারে। এর ওঠা, রানওয়েতে নামা, স্বয়ংক্রিয় দিক নির্ধারণ, নির্ধারিত নিশানা চিহ্নিত করাসহ সবটাই নিখুঁত ও নির্ভুল। বিমানটি সেসব বিশেষজ্ঞদের সামনে প্রমাণ করে দেখিয়েছে। যুদ্ধবিমানটির সফল পরীক্ষার পর ডিআরডিওর কর্তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি জানান, এই যুদ্ধবিমান সামরিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর ভারতের পথ প্রশস্ত করবে।
— DRDO (@DRDO_India) July 1, 2022
ডিআরডিওর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই স্বয়ংক্রিয় বিমানের চলাচলে এর ডানার ভূমিকা অপরিহার্য। বিমানটির জ্বালানি থাকে তার পাখায়। সাধারণত এতদিন যে যুদ্ধবিমান ভারতীয় সেনারা ব্যবহার করেছে, সেখানে জ্বালানি রাখার আলাদা ভাণ্ডার ছিল। কিন্তু এই বিমানে তেমনটা নেই। তবে এখনও সবকিছু খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। যেখানে দরকার, সেসব ক্ষেত্রে বিমানের নকশায় সামান্য অদল-বদল ঘটানো হতে পারে।
— Rajnath Singh (@rajnathsingh) July 1, 2022
তবে সেক্ষেত্রেও বিমানটির মৌলিক কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না। এর মৌলিক যান্ত্রিক কাঠামো, টেক-অফ ও ল্যান্ডিংয়ের জন্য ব্যবহৃত ল্যান্ডিং গিয়ার ডেমনস্ট্রেটরের জন্য ব্যবহৃত অ্যাভিওনিক্স সিস্টেমসহ পুরো ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ ভারতের নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে। এই বিমান বাতাস ছাড়ার মতো একটি ছোট টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন দিয়ে চালিত হয়।
ডিআরডিওর বিজ্ঞানীরা জানান, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে ড্রোনের উন্নয়নে সাহায্য করবে। তবে এজন্য আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে। বিমানের দৈর্ঘ্য, আয়তন এবং ওজনের ব্যাপারটিও দেখতে হবে। আপাতত এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, এই বিমানের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভুল লক্ষ্যে ছোড়া সম্ভব।
এসএসএইচ