ইউক্রেনে গ্রেপ্তার ২ মার্কিনির ফাঁসি উড়িয়ে দেওয়া যায় না: ক্রেমলিন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর পক্ষে অস্ত্র হাতে নেওয়া দুই মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধার মৃত্যুদণ্ডের সম্ভাবনা নাকচ করা যায় না বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই মার্কিন স্বেচ্ছাসেবী সেনা আলেকজান্ডার ড্রুক ও অ্যান্ডি হুইনকে ‘ভাগ্যান্বেষী সৈনিক’ হিসেবে উল্লেখ করে পেসকভ বলেন, ‘তারা আসলে ভাগ্যান্বেষী সৈনিক এবং তাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন অঞ্চলে অবৈধভাবে প্রবেশ ও বিধ্বংসী কার্যক্রম চালানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
‘তারা আমাদের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ও শেল নিক্ষেপ করেছে, আমাদের সেনাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে; এবং যেসব অপরাধ তারা করেছে, সেসবের দায় দায়িত্ব অবশ্যই তাদের নিতে হবে।’
গত ৯ জুন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভে রুশ সেনাদের হাতে ধরা পড়েন আলেকজান্ডার ড্রুক ও অ্যান্ডি হুইন নামের দুই মার্কিন নাগরিক। তারা দুজনই বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সৈন্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে।
ড্রুক ও অ্যান্ডি হুইন দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ইউক্রেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন তারা।
রুশ বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর ড্রুক ও হুইনকে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী শাসিত অঞ্চল দনেতস্কের একটি আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত এক বিচারের শেষে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয় তাদের।
যুদ্ধবন্দি সৈনিকদের সঙ্গে আচরণবিধি কেমন হবে, সে বিষয়ে জেনেভা কনভেনশনে উল্লেখ রয়েছে। তবে ড্রুক ও হুইনের ক্ষেত্রে এই বিধি কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছেন পেসকভ।
‘কারণ, তারা ইউক্রেনীয় বাহিনীর সেনা সদস্য নয়, তাই জেনেভা কনভেনশন তাদের ওপর প্রযোজ্য হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ১১২তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে। বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্কের সেভারদনেতস্ক শহরে ইউক্রেন সেনাদের সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে রুশ বাহিনীর।
এদিকে, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন ড্রুক ও হুইনের সর্বশেষ সংবাদ তিনি জানেন না।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মনোযোগ দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ইতোমধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দেওয়ার বিষয়ে মার্কিন নাগরিকদের একাধিকবার নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ