ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় ইসরায়েল
দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় ইসরায়েল। জাতিসংঘের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের জন্য নিপীড়নমূলক পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে ইসরায়েল সেখানে জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তনের কাজ করছে বলেও এই রিপোর্টে উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) জাতিসংঘ এই রিপোর্ট প্রকাশ করে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ২০২১ সালে ইসরায়েলের চালানো রক্তক্ষয়ী হামলার পর তদন্তের জন্য গঠিত স্বাধীন কমিশন এই রিপোর্টটি প্রকাশ করে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের গঠিত এই কমিশন তাদের রিপোর্টে বলেছে, ইসরায়েলের দখলকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি নেতারা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান এবং ওই ভূখণ্ডে দখলদারিত্ব অবসানে ইসরায়েলকে অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে।
‘শুধু দখলদারিত্বের অবসান যথেষ্ট হবে না,’ উল্লেখ করে মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনে প্রমাণ উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ‘দখলদারিত্ব শেষ করার কোনো ইচ্ছা ইসরায়েলের নেই’।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পূর্ব জেরুজালেম-সহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ চাইছে ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের এই অংশটি দখল করে এবং পরে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে। তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেয়নি।
এছাড়া কমিশন বলেছে, দখলকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের জন্য দমনমূলক পরিবেশ এবং ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে সেখানে জনসংখ্যার ভারসাম্য পরিবর্তনের কাজ করছে ইসরায়েলি সরকার।
একইসঙ্গে ইসরায়েলি নাগরিকদের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ ফিলিস্তিনিদের স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার অস্বীকার করে প্রণীত একটি ইসরায়েলি আইনের কথা উল্লেখ করা হয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের গঠিত স্বাধীন এই কমিশনের প্রতিবেদনে। এতে ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য ‘ভিন্ন নাগরিক মর্যাদা, অধিকার ও আইনি সুরক্ষা’ প্রদানের অভিযোগে ইহুদি এই দেশটিকে অভিযুক্ত করা হয়।
আলজাজিরা বলছে, বর্তমানে ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৭ লাখেরও বেশি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বাসবাস করছে। আবার ওই একই এলাকায় ৩০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি বসবাস করছেন। এখানকার ইসরায়েলি বসতিগুলো অত্যন্ত সুরক্ষিত। তবে কেবল ইহুদিদের বসবাসের জন্য নির্মিত এসব বসতি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-সহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি নীতিকে বর্ণবাদী বলে অভিহিত করেছে।
টিএম