প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে সেনা পাঠাতে চায় তালিবান
সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য আফগানিস্তানের সেনা সদস্যদের ভারতে পাঠানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব। তিনি বলেছেন, এতে (ভারতে আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ) কোনো সমস্যা নেই তাদের।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব সশস্ত্র কট্টরপন্থি গোষ্ঠী তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে এবং তাকে আফগানিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রে সবচেয়ে প্রভাবশালী বলে মনে করা হয়। রোববার (৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি। এরপর থেকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আফগানিস্তান শাসন করছে তারা। যদিও বিশ্বের কোনো দেশ থেকেই এখনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি তারা।
সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ভারতের টিভি চ্যানেল নিউজ১৮ এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মূলত তালেবান তাদের সেনা অফিসারদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে পাঠাতে ইচ্ছুক কি না জানতে চাওয়া হলে মোল্লা ইয়াকুব বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা এতে কোনো সমস্যা দেখি না। আফগান-ভারত সম্পর্ক জোরদার হবে এবং এর মাধ্যমে শক্তিশালী সম্পর্কের ভিত্তিও তৈরি হবে।’
আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রাখতে চায় কি না জানতে চাইলে মোল্লা ইয়াকুব বলেন, ভারতসহ সকল দেশের সঙ্গে তালেবান শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের একসঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে, তখনই আমরা প্রতিরক্ষা সম্পর্কের জন্য প্রস্তুত হবো। তখন সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে বা এ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি হবে না বা আমরা এতে কোনো সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না।’
অন্যান্য দেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে মোল্লা ইয়াকুব বলেন, তারা বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বিশেষ করে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চায়।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এছাড়া তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই বিদেশি সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল আফগানিস্তানের অর্থনীতি। আগস্ট থেকে সেই সহায়তা আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ও মানবিক সংকট কেবলই বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য আফগানিস্তানের সেনাদের ভারতে পাঠানোর ইচ্ছার কথা বললেন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব।
টিএম