চেয়ারম্যানের ভুঁড়ি দেখে মমতার প্রশ্ন, এত বড় মধ্যপ্রদেশ হল কী করে
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন। পরিমিত খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে নিয়মিত হাঁটা। সবই করেন নিয়ম মেনে। গ্রাম্য পথ অথবা পাহাড়ি রাস্তায়ও দিব্যি গাড়ি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন তিনি।
সেই মুখ্যমন্ত্রীই সোমবার পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার প্রশাসনিক সভায় ঝালদা পৌরসভার চেয়ারম্যানের ভুঁড়ি দেখে আঁতকে উঠলেন! প্রশাসনিক আলোচনা ছেড়ে আতঙ্কিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাকে বলেন, আপনার ভুঁড়ি যেভাবে বাড়ছে যে কোনও দিন ব্লক করে যাবেন মনে হচ্ছে! হাঁটাচলা করেন না নাকি?
যাকে দেখে আঁতকে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী, ঝালদা পৌরসভার চেয়ারম্যান সেই সুরেশ আগারওয়াল অবশ্য নিজেকে নিয়ে নিশ্চিন্ত।মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘ব্লক হবে না দিদি। না আমার সুগার আছে, না প্রেসার। এখনও কোনও ওষুধ খেতে হয় না।’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সুরেশের সরল স্বীকারোক্তি ভাজাপোড়ার প্রতি একটু বেশিই আসক্ত তিনি। বিশেষ করে প্রত্যেকদিন সকালে পাকোড়া মুখে না দিলে চলে না।
পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে সোমবার জেলার বিভিন্ন পৌরসভার চেয়ারম্যানদের অভাব-অভিযোগের কথা শুনছিলেন মমতা। কিন্তু সুরেশ আগারওয়ালকে দেখেই পৌরসভার আলোচনা ছেড়ে তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরে দুজনের আলোচনা যেদিকে এগোয়, তাতে রীতিমতো হাসির রোল ওঠে অনুষ্ঠানস্থলে।
সুরেশের দাবি মানতে না চেয়ে মমতা তাকে বলেন, নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা আছে। লিভারের প্রবলেম থাকতে পারে। না হলে এত বড় মধ্যপ্রদেশ কী করে হল? সুরেশ অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তখন মুখ্যমন্ত্রী তার কাছে জানতে চান, সুরেশ নিয়মিত ব্যায়াম করেন কিনা। আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল নেতা জানান, ‘হাঁটাহাটিও করি, রোজ এক দেড় ঘণ্টা ব্যায়ামও করি। কিন্তু খাওয়াদাওয়ার প্রতি একটু বেশিই ঝোঁক। তেলেভাজা পাকোড়া বেশি খেয়ে ফেলি। রোজ সকালে পাকোড়া খাবোই খাবো। কিন্তু রোজ এক দেড় ঘণ্টা ব্যায়াম করি।’
সুরেশের জবাব শুনে মমতা বলেন, ‘কী কী ব্যায়াম করেন একটু দেখান তো আমায়।’ মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে সুরেশ তাকে অনুলোম- বিলোম প্রাণায়ম করে দেখান। তা দেখে মমতা বলেন, ‘এতো প্রাণায়ম দেখাচ্ছেন, এই ব্যায়ামে তো ভুঁড়ি কমবে না। আর কী করেন?’ এবার সুরেশ কপালভাতি করে দেখান। মমতা প্রশ্ন করেন, ‘কপালভাতি কতবার করেন?’ আত্মবিশ্বাসী সুরেশের জবাব, তিনি এক হাজার বার করে রোজ কপালভাতি করেন।
যদিও সুরেশের দাবি খারিজ করে মমতা বলেন, ‘এক হাজার বার রোজ কপালভাতি করলে এরকম ভুঁড়ি হয় না। আপনি স্টেজে এসে আমাকে এক হাজার বার করে দেখান, আমি আপনাকে দশ হাজার টাকা পুরস্কার দেবো।’ মমতার চ্যালেঞ্জও গ্রহণ করেন সুরেশ। কিন্তু তিনি জানান, প্রাণায়ম হয় ভোরে করতে হয়, না হলে বিকেল পাঁচটার পর। সন্ধ্যা বেলা তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে এক হাজার কপালভাতি করে দেখাবেন।
মমতা অবশ্য সুরেশের দাবি মানতে চাননি। হাসতে হাসতেই তিনি বলেন, ‘তাহলে কীভাবে নিঃশ্বাস নিতে হয়, আর ছাড়তে হয় আপনি জানেন না। ওরকমই শুধু পেট নাচান। কী ঠিক তো? কপালভাতি কিন্তু আমিও করি।’ এরপর আর মমতার সঙ্গে কথা বাড়াননি সুরেশ। নিউজ ১৮।
এসএস