রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নিজেদের ক্ষতি হচ্ছে, স্বীকার জার্মানির
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে নিজ দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ। তবে তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি পুতিন তার লক্ষ্যে পৌঁছে যান, সেক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়বে।
রোববার জার্মানির হ্যানোভার শহরে এক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ওলাফ শুলজ। সেখানে দেওয়া ভাষণে জার্মানির চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানি রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা দিন দিন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে চেপে বসছে রাশিয়ার নেতৃত্ব ও রুশ অর্থনীতির ওপর।’
‘অবশ্য একই সঙ্গে আমরা নিজেরাও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছি। রাশিয়ার ওপর নিষেধজ্ঞা জারির কারণে যে ইউরোপের বহু কোম্পানিকে আর্থিক লোকসান গুণতে হচ্ছে— তা আমি জানি। ঋণ, বীমা ও আর্থিক সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এসব কোম্পানির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার।’
‘কিন্তু বাস্তব সত্য হলো—এসব সহযোগিতা দিয়ে লোকসান কিংবা ঘাটতি পুরোপুরি মেটানো সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে আরও এক নির্মম সত্য হলো—ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিন যে লক্ষ্য নিয়েছেন, তাতে পৌঁছাতে তিনি যদি সফল হন— তাহলে যে মূল্য আমাদের দিতে হবে, তার কাছে বর্তমান ক্ষয়ক্ষতি কিছুই নয়।’
পশ্বিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণা দেওয়ার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
সোমবার ৯৬ তম দিনে পৌঁছেছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। ইতোমধ্যে দেশটির দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম এবং মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
এদিকে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের ২৭ টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পশ্চিমা এসব দেশ অনুমান করেছিল—এসব নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে বিপুল অর্থনৈতিক চাপে পড়বে রাশিয়া এবং একসময় ইউক্রেন থেকে পিছু হটতে বাধ্য হবে।
তবে সেই অনুমান সঠিক বলে প্রমাণিত হয়নি। যুদ্ধ শুরুর পর তিন মাস গড়িয়ে গেলেও ইউক্রেনে অভিযানরত রুশ বাহিনীর পিছু হটার কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
সূত্র: তাস
এসএমডব্লিউ