টিকা নিতে বাধ্য করা যাবে না, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ
কেউ যদি ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে না চান, তাহলে তাকে সেটি নিতে বাধ্য করা যাবে না। সোমবার (২ মে) ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে এমনই নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকার করার অধিকার রয়েছে বলেও জানিয়েছে আদালত।
একইসঙ্গে বিভিন্ন ভ্যাকসিন নেননি এমন মানুষকে বিধি-নিষেধের আওতায় রাখা ঠিক নয় বলেও মত দিয়েছে প্রতিবেশী দেশটির শীর্ষ আদালত। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে সুপ্রিম কোটের এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছে এনডিটিভি। মূলত ভারত সরকারের করোনা টিকা সংক্রান্ত নীতি নিয়েই সোমবার সিদ্ধান্ত জানায় আদালত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, টিকা সংক্রান্ত বিষয়ে দেশটির আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থে ওই মামলা দায়ের করেছিলেন ড. জেকব পুলিয়েল। সোমবার বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়।
শুনানির পর ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধানের ২১তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নিজের শরীরে কী করা হবে বা না হবে, সেই অধিকার সুরক্ষিত রয়েছে। তাই বিভিন্ন রাজ্যে করোনা সংক্রান্ত গাইডলাইনে টিকাপ্রাপ্ত নয় এমন মানুষের ওপর বিধিনিষেধ থাকা উচিত নয় বলেই জানিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত।
মূলত টিকা না নিলে সব জায়গায় যাওয়া যাবে না, এমন নির্দেশনা রয়েছে ভারতের অনেক রাজ্যেই। আর তাতেই আপত্তি জানিয়েছেন আদালত। টিকাপ্রাপ্ত মানুষের তুলনায় ভ্যাকসিন নেননি এমন মানুষের থেকে সংক্রমণ বেশি ছড়ায়, এমন কোনো তথ্য সরকার সামনে আনেনি বলেও উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিকে জনস্বার্থে দায়ের করা ওই মামলায় আবেদনকারী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনার কথা বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিনের কারণে সৃষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করতে ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া সেই রিপোর্ট যাতে সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসক প্রত্যেকের কাছেই পৌঁছায়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। এছাড়া ট্রায়ালে কী ফল পাওয়া গেছে তার বিস্তারিত রিপোর্টও প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অবিলম্বে এই সকল তথ্য প্রকাশ করতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে।
এমএইচএস/টিএম