রোজ ২৮৪ কিমি. পথ যাতায়াত, শিক্ষিকার বদলির আবেদন মঞ্জুর আদালতে
স্কুলে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন ২৮৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে অসুস্থ শিক্ষিকা। তার শারীরিক অসুস্থতার কথা বিচার করে বাড়ির কাছের স্কুলে বদলির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় শিক্ষিকার চিকিৎসার রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দুই দিনের মধ্যে স্কুলকে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট ইস্যু করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি জেলার স্কুল পরিদর্শক ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিচারপতির নির্দেশ, ওই শিক্ষিকার আবেদন পাওয়া মাত্র তাকে তার পছন্দ করা বাড়ির কাছের স্কুলে নিয়োগ দিতে হবে।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের সংস্কৃতের শিক্ষিকা স্নিগ্ধা দত্তর বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্কুলে পৌঁছে ক্লাস সেরে আবার রাতে বাড়ি ফিরে আসতে রোজ ২৮৪ কিলোমিটার পথ যাতায়াত করতে হয়। ২০১৮ সাল থেকে এভাবেই স্কুল চালিয়ে যাচ্ছেন চান্ডুলের বাসিন্দা স্নিগ্ধা দত্ত। হাওড়া উলুবেরিয়ায় জয়পুর সুরঙ্গময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে তিনি চাকরি করেন।
কিন্তু হঠাৎ তার শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় তার পক্ষের রোজ এতটা রাস্তা যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছিল না। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে, চিকিৎসকরা তাকে বলেন, নিত্য দিন এতটা যাতায়াত তার শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। এমনকি, জীবনহানির কারণেও হতে পারে এই যাতায়াত।
পরে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি বদলির আবেদন জানান। কিন্তু স্কুলের তরফ থেকে তাকে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। চারবার আবেদন জানালেও তার আবেদন মঞ্জুর করেনি স্কুল।
মামলায় স্কুলের বক্তব্য ছিল, ওই শিক্ষিকার চাকরির মেয়াদ এখনও ৫ বছর হয়নি। তাছাড়া সংস্কৃতে তিনি একমাত্র শিক্ষিকা। তাই তার বদলির আবেদন গৃহীত হয়নি।
আর উপায় না পেয়ে স্নিগ্ধাদেবী কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। বিষয়টি নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপারকে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শিক্ষিকার শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
১১ তারিখ হাসপাতাল সুপার রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, প্রতিদিন স্নিগ্ধা দেবীর পক্ষে এতটা যাতায়াত জীবনহানির কারণ হতে পারে। এদিন সেই রিপোর্ট দেখে বিচারপতির মন্তব্য, ‘এ যেন রোজ দীঘা বা তালসারি ঘুরে আসা। একজন শিক্ষিকা অসুস্থ শরীরে রোজ ২৮৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করছেন এটা হতে পারে না।’ এর পরই বদলির নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আইএসএইচ