মারিউপোলের যোদ্ধাদের হত্যা করলে শান্তি আলোচনা শেষ: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলের বেশিরভাগ অংশ দখলে নিয়েছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ছোট একটি দল এখনও শহরটির একটি বৃহৎ ইস্পাত কারখানার ভেতরে অবস্থান করছে।
এই পরিস্থিতিতে ইস্পাত কারখানা থেকে ঘাঁটিতে পরিণত হওয়া অজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টে রুশ সেনাদের সম্ভাব্য হামলার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, মারিউপোলের যোদ্ধাদের হত্যা করলে শান্তি আলোচনা আর চালিয়ে যাবে না কিয়েভ। রোববার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আট সপ্তাহ আগে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
অভিযান শুরুর পর রাশিয়া ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের অনেক এলাকায় সাফল্য পেলেও দেশটির উল্লেখযোগ্য বা বড় কোনো শহর এখনও দখলে নিতে পারেনি রুশ সেনারা। এছাড়া মস্কো ইতোপূর্বে মারিউপোল শহরের বেশিরভাগ অংশ দখলে নেওয়ার দাবি করলেও ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের অবশিষ্ট একটি অংশ শহরটির একটি ইস্পাত কারখানায় অবস্থান করছে। মূলত কারখানার ভেতরে রুশ বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে তারা।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের ওই দলটিকে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল মস্কো। এমনকি আত্মসমর্পণ করা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল দেশটি। সেই আহ্বানে সাড়া না মেলায় গত বুধবার ফের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেয় রাশিয়া। তবে এরপরও মেলেনি সাড়া।
এই পরিস্থিতিতে অজভস্টাল স্টিল প্ল্যান্টে রুশ সেনারা যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মারিউপোলের আজভস্টাল কারখানায় এখনও আটকে থাকা ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের রাশিয়া হত্যা করলে কিয়েভের আলোচকরা মস্কোর সাথে শান্তি আলোচনা থেকে সরে আসবে।
শনিবার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি মারিউপোলে আমাদের লোকদের হত্যা করা হয় তাহলে যেকোনো আলোচনা প্রক্রিয়া থেকে সরে আসবে ইউক্রেন।’
বিবিসি বলছে, মারিউপোলে ইউক্রেনের সর্বশেষ এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের এই দলটি মেরিন সেনা, বিতর্কিত আজভ রেজিমেন্টের সদস্য, সীমান্তরক্ষী এবং পুলিশ অফিসারদের নিয়ে গঠিত। এই বাহিনীই মূলত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
বিশাল এই ইস্পাত কারখানায় বেসামরিক ব্যক্তিরাও আশ্রয় নিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আজভ রেজিমেন্টের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে একটি জণাকীর্ণ ঘরে অবস্থানরত নারী ও শিশুদের বলতে শোনা যায়, তাদের খাবার ও পানি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর তাই দ্রুত তাদেরকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধও জানান তারা।
টিএম