ইউক্রেনের সেই ঘাঁটিসহ পুরো মারিউপোল আজই দখলে নেবে রাশিয়া
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের প্রতিরোধের শেষ প্রধান ঘাঁটি দখলের মাধ্যমে বৃহস্পতিবারই (২১ এপ্রিল) অবরুদ্ধ শহরটি পুরোপুরি দখলে নেবে রাশিয়া। শহরটিতে অবস্থানরত সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ইউক্রেন আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার পর এই তথ্য জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ একজন সহযোগী।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী।
আট সপ্তাহ আগে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
অভিযান শুরুর পর রাশিয়া ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের অনেক এলাকায় সাফল্য পেলেও দেশটির উল্লেখযোগ্য বা বড় কোনো শহর এখনও দখলে নিতে পারেনি রুশ সেনারা। এছাড়া মস্কো ইতোপূর্বে মারিউপোল শহরের বেশিরভাগ অংশ দখলে নেওয়ার দাবি করলেও ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের অবশিষ্ট একটি অংশ শহরটির একটি ইস্পাত কারখানায় অবস্থান করছে। মূলত কারখানার ভেতরে রুশ বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে তারা।
এই পরিস্থিতিতে দিন দু’য়েক আগে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের ওই দলটিকে আত্মসমর্পণের আল্টিমেটাম দিয়েছিল মস্কো। এমনকি আত্মসমর্পণ করা যোদ্ধাদের জীবন রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল দেশটি। সেই আহ্বানে সাড়া না মেলায় বুধবার ফের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেয় রাশিয়া। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় শহরটিতে অবস্থানরত সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেয় ইউক্রেন।
এরপরই ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের অবশিষ্ট ঘাঁটি আজভস্টাল ইস্পাত কারখানা দখলের ঘোষণা দেন রাশিয়ার চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধান ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ সহযোগী রমজান কাদিরভ। তিনি বলেছেন, ‘দুপুরের খাবারের আগে বা দুপুরের খাবারের পরে, আজভস্টাল সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ান ফেডারেশনের বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রুশ সেনাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে রমজান কাদিরভের চেচেন বাহিনীও। অবশ্য রমজানের এই দাবির বিষয়ে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচ লাখ বাসিন্দার মারিউপোল শহরটি দখল করা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ এই শহরটি আজভ সাগরে ইউক্রেনের কৌশলগত বন্দর এবং ডনবাস অঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোর কাছেই অবস্থিত।
টিএম