সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন রাজাপাকসে সরকার
অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়া শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে ভাঙন ধরেছে। মঙ্গলবার ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে গেছেন ৪০ জনের বেশি সংসদ সদস্য।
রাজাপাকসের রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কা পোদুজানা পেরামুনা (এসএলপিপি) নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যরা বলেছেন, এখন থেকে তারা স্বতন্ত্র হিসেবে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে বিদ্যুতের ব্যাপক ঘাটতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য আকাশ ছুয়েছে।
দেশটিতে চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তীব্র গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেক দিন হাজার হাজার মানুষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করছেন। প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া সংসদ সদস্যদের এই পদক্ষেপের প্রভাব কেমন হবে, সেটি স্পষ্ট নয়। সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও এখন পর্যন্ত তারা বিরোধীদের প্রতি সমর্থন জানাননি।
ক্ষমতাসীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলায় পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকবে কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট এবং তার ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এর পরিবর্তে দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার এবং নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে সহায়তা করতে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া। তবে বিরোধীরা প্রেসিডেন্টের এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ লঙ্কানরা বিদায় চান প্রেসিডেন্টের
সংকটে জর্জরিত দেশটির নতুন নিয়োগকৃত অর্থমন্ত্রীও মঙ্গলবার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। নিয়োগের ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলী সাবরি বলেছেন, তিনি (প্রেসিডেন্ট) রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরের কারো কাছে তার সংসদীয় আসন ছেড়ে দেবেন, যিনি ‘পরিস্থিতি সামলানোর জন্য উপযুক্ত’ হতে পারেন।
এদিকে, মঙ্গলবারও দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভকারীরা দেশের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করে আন্দোলন করছেন।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসএস