বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট নেতা’ শুভেন্দু

দলে কয়েক সপ্তাহের টানাপোড়েনের পর প্রত্যাশিতভাবেই বিজেপিতে নাম লেখালেন মমতা বন্দোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বিজ্ঞাপন
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর কলেজ মাঠে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির প্রধান নীতি নির্ধারক অমিত শাহকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভার সদস্যপদ ছাড়তে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন শুভেন্দু অধিকারী। এর আগে তিনি মমতা নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভা থেকেও ইস্তফা দেন।
বিজ্ঞাপন
এই সময় মঞ্চে শুভেন্দুর হাতে বিজেপির (ভারতীয় জনতা পার্টি) পতাকা তুলে দেন অমিত শাহ।
পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দলটির প্রভাবশালী এই নেতা, বিধানসভার সদস্য এবং এক সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ‘ডানহাত’ শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন তৃণমূলের কয়েকজন প্রথম সারির নেতাও।
বিজ্ঞাপন
গত বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভার সদস্যপদ ছাড়তে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন শুভেন্দু অধিকারী। এর আগে তিনি মমতা নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভা থেকেও ইস্তফা দেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় প্রতিষ্ঠাকালীন এই সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেন।
শনিবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠের যে মঞ্চে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন, সেখানে তৃণমূল ছাড়া বিরোধীদল সিপিএম এবং কংগ্রেসের কয়েকজন নেতাকেও দেখা গেছে। তারাও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
তবে শুরু থেকেই সবার মনযোগের কেন্দ্রে ছিলেন শুভেন্দু। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি। তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় প্রতিষ্ঠাকালীন এই সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেন।
কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঞ্চে অমিত শাহকে ‘বড়ভাই’ বলে সম্বোধন করেন শুভেন্দু।
এ সময় তিনি বলেন, ‘যখন আমি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম, তখন আমার পুরনো দলের কেউ আমার খোঁজ নেয়নি। অথচ তাদের জন্য আমি কাজ করেছি। আমি অকৃতদার থেকেছি; কিন্তু সে সময় অমিত শাহ আমার খোঁজ নিয়েছিলেন। দু’বার ফোন করেছেন। আমার বড়দাদা উনি। ভাইয়ের মতো স্নেহ করেন’।
অনেকে বলছেন, আমি নাকি মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। আমি বলি, আমার মা গায়ত্রী অধিকারী; এবং ভারতমাতা আমার মা। আর কেউ আমার মা নন
শুভেন্দু অধিকারী
তৃণমূলের ‘ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা তার আত্মসম্মানে ঘা’ দিচ্ছিল এবং তৃণমূলের সাবেক নেতা ও বিজেপির বর্তমান সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় তাকে ‘আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে’ দলে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন শুভেন্দু।
এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলছেন, আমি নাকি মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। আমি বলি, আমার মা গায়ত্রী অধিকারী; এবং ভারতমাতা আমার মা। আর কেউ আমার মা নন’।
নিজের বক্তব্যের একেবারে শেষে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘শুক্রবার আমার পুরনো দলের এক সহকর্মী একটি ভিডিও পাঠান। লোকসভা ভোটের প্রচারে আমি তৃণমূল কর্মী হিসেবে বলেছিলাম— বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। তো আমি তাঁকে বললাম, যখন যে কাজ করি, নিষ্ঠার সঙ্গে করি। তখন বলেছি বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। কাল বলব, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’।
শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ১১ জন প্রথম সারির নেতা বিজেপিতে যোগ দেন
এরপর তিন বার বেশ জোরের সঙ্গে ওই একই বাক্য উচ্চারণ করেন শুভেন্দু।
শনিবার শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ১১ জন প্রথম সারির নেতা বিজেপিতে যোগ দেন। এরা হলেন—সুনীল মন্ডল,বনশ্রী মাইতি, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, শীলভদ্র দত্ত, অশোক ধিন্দা, বিশ্বজিৎ কুন্ডু, তাপসী মন্ডল, দিপালী বিশ্বাস, সুকরা মুন্ডা, সৈকত পাঁজা এবং দশরথ তিরকে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, আনন্দবাজার পত্রিকা
এসএমডব্লিউ/এএস