ইউক্রেনে কেন সামরিক অভিযান ন্যায্য, যা বললেন পুতিন
ইউক্রেনে চলমান রুশ সামরিক অভিযানের ন্যায্যতা ফের রাশিয়ার জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার রাজধানী মস্কোর লুঝনিকি ফুটবল স্টেডিয়ামে রাশিয়ার জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার ওই স্টেডিয়ামে ছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। তাদের অনেকেই রাশিয়ার পতাকা নাড়ছিলেন এবং দেশের নামে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়ে জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন বলেন, ‘আমাদের কী করার প্রয়োজন, তা আমরা জানি, কীভাবে করতে হবে তাও জানি এবং এজন্য যে মূল্য আমাদের দিতে হবে, সে সম্পর্কেও আমরা অবগত।’
‘এবং আমরা অবশ্যই আমাদের যাবতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব, আমরা করবই।’
রাশিয়ার ৬৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন স্টেডিয়ামজুড়ে ‘আমরা নাৎসিবাদমুক্ত পৃথিবী চাই’ ‘আমরা আমাদের প্রেসিডেন্টকে সমর্থন করি’—ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন জনতা।
ভাষণে অভিযানরত রুশ সেনাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘তারা সেখানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলছে, পরস্পরকে সহযোগিতা করছে, পরস্পরকে সমর্থন করছে…এমনকি, একজনকে গুলির আঘাত থেকে বাঁচাতে আর একজন নিজের বুক পেতে দিচ্ছে ভাইয়ের মতো। বহুদিন আমরা এমন ঐক্য দেখিনি।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে নিয়ে সৃষ্ট তিক্ততার জেরে রুশ বাহিনীকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন পুতিন। শুক্রবার ২৩ তম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান।
ইতোমধ্যে এই অভিযানে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই রুশ সেনা; এবং যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।
মস্কো অবশ্য এসব নিষেধাজ্ঞাকে আমলে নিচ্ছে না। উপরন্তু পুতিন বলেছেন, রাশিয়াকে হুমকি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেইনকে ব্যবহার করার চেষ্টা প্রতিহত করা এবং দোনেতস্ক ও লুহানস্কের রুশভাষীদেরকে ইউক্রেইনের ‘গণহত্যার’ ত থেকে বাঁচাতে এই ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’জরুরি হয়ে পড়েছিল।
শুক্রবার বক্তব্য দেওয়ার সময় পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে অষ্টাদশ শতাব্দির রুশ নৌ বাহিনীপ্রধান ফিওদর উশাকভকে স্মরণ করেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘ফিওদর উশাকভ একবার বলেছিলেন— রাশিয়াকে ঝড়ঝাপ্টা পেরিয়েই সামনে এগোতে হবে এবং এসব ঝড়ঝঞ্ঝা একসময় রাশিয়ার মহিমা হয়ে উঠবে।’
‘তিনি যা বলেছিলেন তা তখন সত্য ছিল, বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতেও এটি সত্য এবং রাশিয়ার জন্য সবসময়েই তা সত্য থাকবে।’
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ