একদিনে আরও সাড়ে ৭ হাজারসহ মোট মৃত্যু ছাড়াল ৬০ লাখ
চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৬ লাখ ১০ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও জাপান। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৪ কোটি ১৯ লাখ। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ লাখের মাইলফলক।
শুক্রবার (৪ মার্চ) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ হাজার ৫৬৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে অর্ধশতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬০ লাখ ৭৫৩ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখ ১০ হাজার ৪৭৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ১০৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২ হাজার ৩৩৮ জন এবং মারা গেছেন ২৮৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫০৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ২৬৫ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৯১ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ২৫৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৯ লাখ ৮১ হাজার ৭২৯ জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৮১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯৩ হাজার ২৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ১১ জনের।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৯৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬৪ হাজার ৫৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৬৪৬ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০১ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৬ হাজার ১০২ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪ কোটি ২৯ লাখ ৫১ হাজার ২৬২ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ১৪ হাজার ৬২০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৪২৪ জন এবং মারা গেছেন ১৮৮ জন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ জন এবং মারা গেছেন ১৮৫ জন। ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজার ২৫৯ জন এবং মারা গেছেন ২৩২ জন।
গত একদিনে ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ২২৫ জন এবং মারা গেছেন ১৮০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২৯ লাখ ৫৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৮ হাজার ৯৪২ জন মারা গেছেন। গত একদিনে পোল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৬৮ জন এবং মারা গেছেন ২৬৬ জন।
এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চিলিতে ২৭২ জন, আর্জেন্টিনায় ১৪১ জন, ইরানে ১৭২ জন, জাপানে ২৩২ জন, রোমানিয়ায় ১০৫ জন, ফিলিপাইনে ৩৪ জন এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ১২৮ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৩০৪ জন। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৮৩৫ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
টিএম