ঈদে পরীক্ষা কম হয়েছে, সংক্রমণের হার কমেনি
ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা কম হয়েছে, তবে সংক্রমণের হার কমেনি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত সাত দিনের সংক্রমণ পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে নমুনা সংগ্রহ কম হয়েছে, সে হিসেবে পরীক্ষা হয়েছে কম। ফলে মোট রোগীর সংখ্যা কমেছে। তবে শতকরা হিসেবে সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের নিচে নামেনি। বরং ২৪ জুলাই ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ১৯ জুলাই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে ২৩১ জন। সবচেয়ে কম মারা গেছেন ২৩ জুলাই ১৬৬ জন। ২৯তম এপিডেমিক সপ্তাহে ২৪ জুলাই পর্যন্ত দুই লাখ দুই হাজার ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় পরীক্ষার হার ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমেছে। ঈদের বন্ধের কারণে এই সংখ্যা কমতে পারে। তবে সুস্থতার হার ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, জেলাভিত্তিক শনাক্তের হিসাবে ঢাকা শীর্ষে অবস্থান করছে। ঢাকায় ইতোমধ্যে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তারপর আছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, ফরিদপুর এবং সবচেয়ে কম সংখ্যক রোগী চিহ্নিত হয়েছে রাজশাহীতে- ১৮ হাজার ৪১৬ জন। বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর হারেও এগিয়ে আছে ঢাকা। এরপরই রয়েছে খুলনা বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, গত এক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের হার যদি দেখি, গত ১৯ জুলাই করোনায় প্রাণহানি হয়েছে ২৩১ জনের এবং সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রাণহানি ঘটেছে ২৩ জুলাই ১৬৬ জন। গতকালও আমরা করোনায় ১৯৫টি মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছি। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত যদি আমরা চিত্রটির দিকে তাকাই, তাহলে আমরা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দেখেছি সংক্রমণ অত্যন্ত কম ছিল। এপ্রিল মাসে সেটি বাড়তে শুরু করে, জুন মাসে সেটি অব্যাহতভাবে বেড়ে যায় এবং জুলাই মাসে এসে সংখ্যাটি যেকোনো সময়ের থেকে সবচেয়ে বেশি হয়ে যায়। ইতিমধ্যে জুলাই মাসে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের সংখ্যা ২ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে।
হাসপাতালে শয্যা প্রসঙ্গে অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, ডেডিকেটেড যে হাসপাতালগুলো সরকারি-বেসরকারি ঢাকা মহানগরীতে পাঁচ হাজার ৭১৭টি শয্যা আছে। তার মধ্যে এক হাজার ৯৬৩টি শয্যা গতকাল পর্যন্ত খালি ছিল। কোভিড ডেডিকেটেড আইসিইউতে রাজধানীতে মোট ৮৯৮টি শয্যা ছিল, তার মধ্যে গতকাল পর্যন্ত খালি ছিল ১৩৭টি। সারাদেশে করোনা ডেডিকেটেড সরকারি- বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে সর্বমোট ১৫ হাজার ৬৩০টি সাধারণ শয্যা ছিল, সেগুলোর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৯৪টি শয্যা খালি ছিল।
নাজমুল ইসলাম আরও বলেন, সর্বাত্মক যে লকডাউন চলছে আজ তার তৃতীয় দিন। আমরা মনে করি যে সবার সক্রিয় সমর্থন এবং এর মধ্য দিয়েই এটি সফল করা সম্ভব। এই লকডাউন সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি আছে, সেটি টেনে ধরতে পারবে। পাশাপাশি যাদের টিকা নিতে নিবন্ধন হয়েছে, যারা টিকা দেওয়ার জন্য উপযুক্ত আছেন কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করেননি, তারা অবিলম্বে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেন এবং দ্রুত টিকা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
টিআই/জেডএস