বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরা করোনার টিকা নিতে পারবেন?
করোনা মহামারি থেকে মুক্তির আশা দেখাচ্ছে টিকা। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকা দেওয়া নিয়ে জটিলতা না থাকলেও গর্ভবতী, যে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান বা শিশুরা টিকা নিতে পারবে কি না তা নিয়ে নানা মত রয়েছে।
তবে ছোট্ট একটা গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন্যদানের সময় mRNA প্রতিষেধক নিরাপদ। জেএএমএ পিডিয়াট্রিকস জার্নালে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
এ প্রতিবেদন অনুসারে, ফাইজার বা মডার্নার মতো টিকাগুলো মায়ের দুধ খাওয়া শিশুদের জন্য নিরাপদ। এ গবেষণার অংশ হিসেবে, সাতজন নারীর স্তনদুগ্ধের নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করা হয়। ওই সাতজন নারীই ফাইজার ও মডার্নার টিকা নিয়েছিলেন। ওই নমুনায় করোনা প্রতিরোধকারী mRNA-র কোনো চিহ্নই পাওয়া যায়নি।
এরআগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অন্যান্য প্রাপ্তবয়স্কদের মতে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদেরও করোনার টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। অ্যাকাডেমি অব ব্রেস্টফিডিং মেডিসিনের মতে, টিকার ন্যানোপার্টিকল বা mRNA-র দুধে স্থানান্তরিত হওয়ার সামান্য ঝুঁকি রয়েছে। তাত্ত্বিকভাবে এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে তারা মত প্রকাশ করেছিলেন।
এ গবেষণা দলের একজন অধ্যাপক স্টেফানি এল গ্য বলছেন, ‘mRNA ভ্যাকসিন যে স্তন্যদানের ক্ষেত্রে নিরাপদ তা এই সমীক্ষার ফলাফলের পর আরও মজবুত হয়েছে। তাই স্তন্যদানকারী মহিলারা এই ভ্যাকসিন নিলে নিজের সন্তানকে স্তনদুগ্ধপান করানো বন্ধ করবেন না।’
গবেষণার প্রধান অথার ইয়ার্ডেন গোলান বলেন, ‘যে সমস্ত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, তার মধ্যে mRNA ভ্যাকসিনের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।’ ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। mRNA ভ্যাকসিনগুলো যে স্তন্যদানের সময় নিরাপদ, সে বিষয় পরীক্ষামূলক প্রমাণ পাওয়া গেছে এ সমীক্ষার মাধ্যমে।
এ সমীক্ষায় যে মায়েদের দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাদের বয়স ৩৭.৮। আবার শিশুদের বয়স এক মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে। স্তন্যদানকারী নারীদের টিকা নেওয়ার আগে একবার দুধের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার পর টিকা নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নানান সময় তাদের কাছ থেকে দুধের নমুনা সংগৃহীত হয়েছে। সমীক্ষায় জানা গেছে যে, দুধের কোনো নমুনা থেকেই mRNA ভ্যাকসিনের কোনো উপাদানের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই ছোট সমীক্ষার ফলাফলের পর এবার গবেষকরা বিপুল জনসংখ্যার কাছ থেকে এমন ক্লিনিক্যাল ডেটা সংগ্রহ করতে চাইছেন। স্তন্যদানের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী, তা তখনই আরও ভালো ভাবে বোঝা যাবে।
এনএফ