সীমান্তে ভয় নেই, পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুত রয়েছে
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন মজুত আছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বুধবার (২ জুন) দুপুরে অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের শতকরা ৯০ ভাগই বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাকি ১০ শতাংশ রোগীদের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে এবং তাদের অনেকেরই অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সারাদশেই আমাদের অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে প্রায় এক হাজার ৫৮৯টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা এবং এক হাজার ৪৬৯টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও ২৩ হাজারের বেশি অক্সিজেন সিলিন্ডার আমাদের সরবরাহ করা আছে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে শতকরা হিসাবে শনাক্তের হার অন্য যেকোন জেলার তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই, সে জায়গাগুলোর হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেনসহ চিকিৎসাসামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত এক সপ্তাহে যদি আমরা সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখি, তাহলে ২৬ মে শতকরা হিসাবে শনাক্তের হার ছিল ৯ দশমিক ১১ শতাংশ। সেইদিন এক হাজার ৪৯৭ জন রোগী আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছিলাম। তারপর তিন দিন সংক্রমণের সংখ্যা খানিকটা কম ছিল। এরপর আবার সপ্তাহের শেষে এসে ৩১ মে এবং পহেলা জুনে শনাক্তের সংখ্যা ১৭শ ছাড়িয়ে গেছে। এর মানে বুঝতেই পারছেন, সংক্রমণ কিন্তু আবার বাড়তে শুরু করেছে।
করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাদের যেটি করণীয়, তা হলো- স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এমনকি এ সতর্কবার্তাটি সবাইকে ছড়িয়ে এবং জানিয়ে দেওয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী কোনো জেলাতেই রোগীরা ঠিকমতো আইসিইউ সাপোর্ট পাচ্ছেন না। ফলে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাদের বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা রাজধানীতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। অনেক রোগী দূরবর্তী এসব হাসপাতালে পৌঁছার আগেই রাস্তায় মারা যাচ্ছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জেলা হাসপাতালগুলোতে তীব্র জনবল সংকট। সব মিলিয়ে সীমান্তের জেলাগুলোতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অব্যবস্থাপনা।
সরকারি নীতি অনুযায়ী, প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে ১০ থেকে ২০ বেডের আইসিইউ থাকা বাধ্যতামূলক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গাইডলাইন অনুযায়ী, ১০০ বেডের হাসপাতালে কমপক্ষে ১০ বেডের আইসিইউ থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় ভারতীয় ধরনে অধিক সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। তবে এসব জেলার অধিকাংশ হাসপাতালেই নেই করোনা চিকিৎসার পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ বেডের জেলা সদর হাসপাতালে ২০ বেডের কোভিড ইউনিট থাকলেও কোনো আইসিইউ নেই। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে আইসিইউ সাপোর্টের জন্য নিয়ে যেতে হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। একই অবস্থা অন্য জেলা হাসপাতালগুলোতেও।
টিআই/এসএম