গণঅভ্যুত্থানে আহতরা কবে হাসপাতাল ছাড়বেন?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৫ মাস পেরোলেও আহতদের বড় অংশই এখনো হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সুস্থ হয়ে উঠলেও কেন এখনো তারা হাসপাতাল ছাড়ছেন না— এই প্রশ্ন অনেকের মুখেই। এ বিষয়ে সাংসাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আহত শিক্ষার্থী মো. সৌরভ ইসলাম বলেছেন, আমরা উন্নত চিকিৎসার নিশ্চয়তা পেলেই হাসপাতাল ছেড়ে যাব। তবে কিছু আহত আছেন, যাদের পুনর্বাসন ছাড়া হাসপাতাল ছাড়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সৌরভ ইসলাম বলেন, অনেকে বলে থাকেন আমরা এখানে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি, তাই হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছি না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, হাসপাতালে কেউ সুখের জন্য আসে না। আমাদের সুচিকিৎসা করা হোক, আমাদের জন্য স্বাস্থ্য কার্ডের ব্যবস্থা করা হোক। আমরা উন্নত চিকিৎসার নিশ্চয়তা পেলে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাবো।
তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে কিছু মানুষ আছেন, যাদের এক বছর চিকিৎসা দরকার বা কারও ৬ মাস চিকিৎসা দরকার। তারা এখন কোথায় যাবে? তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আর যদি কোনো ব্যবস্থা করতে না পারেন, তাহলে তারা হাসপাতালেই থাকবে।
আরও পড়ুন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই জুলাই অভ্যুত্থান কর্মী বলেন, আমরা এখন আগের তুলনায় বেশ ভালো আছি। ধীরে ধীরে আমরা সুস্থতার দিকে যাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে যতটুকু সম্ভব করছেন, কিন্তু আমরা মনে করি এরচেয়েও ভালো করা যায়। তাই আমরা আহ্বান করবো, সর্বোচ্চ যতোটা ভালো করা যায়, ততটুকুই যেন সরকার করেন।
সৌরভ ইসলাম আরও বলেন, এখনো আমাদের অনেক আহত ভাই আছেন, অনেকে তাদের মূল্যবান চোখ হারিয়েছেন। যারা হারিয়েছেন, তারাই এর মূল্য বুঝবেন। আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাদের বিদেশে যাওয়া অতীব জরুরি। অনেক ভাইয়ের ক্ষেত্রে বিদেশ নিয়ে যেতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমি আহ্বান জানাবো, আমাদের যাদের দ্রুত বিদেশে যাওয়া দরকার, তাদের দ্রুত বিদেশে পাঠান এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
অর্থ সহায়তা চেয়ে এই আহত বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশনকে আমরা ধন্যবাদ দিতে চাই। এই দুঃসময়ে তারা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং আমাদের অনেককে সহায়তা করেছে। কিন্তু সেইসঙ্গে তাদের এটাও বলতে চাই, আমরা আহত মাত্র ২২ হাজার আর দেশে জনসংখ্যা ১৭ কোটির বেশি। আমরা এতগুলো মানুষ যখন আহত হয়েছি, তখন নিশ্চয়ই হাসপাতালগুলোতে আমাদের তথ্যগুলো ছিল। এই তথ্যগুলো সাপেক্ষে ভ্যারিফিকেশন করে যতদ্রুত সম্ভব জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে টাকাগুলো দিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে আমাদের ৩ লাখ করে টাকা দেবে, কিন্তু সেটি আমরা কখন পাবো কিছুই জানি না। তাই আমরা বলব কাগজপত্র যা যা যাচাইবাছাই করা দরকার, দ্রুত সেগুলো করে দ্রুত প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করবেন।
টিআই/এমএ