আইন সংশোধনে যত বিলম্ব তত বাড়বে তামাকজনিত মৃত্যু
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে বিলম্ব হওয়ায় তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে যত বিলম্ব হবে, ততই তামাকজনিত মৃত্যু বাড়তে থাকবে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় তামাকের ক্ষতি হ্রাসে আইনের সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা।
কর্মশালায় জানানো হয়, মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে খসড়া সংশোধনীটি চূড়ান্ত হওয়ার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। খসড়া সংশোধনীতে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন বন্ধ, ই-সিগারেট ও ভেপিংপণ্য পণ্য নিষিদ্ধকরণ, তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ এবং খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধকরণসহ বেশকিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক সর্বোত্তম নীতিগুলো পর্যালোচনার করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, তামাক কোম্পানির অব্যাহত হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, ২০০০ সালে বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করতো, যা ২০২২ সালে এসে দাঁড়িয়েছে পাঁচ জনে একজন। তবে, বাংলাদেশে এখনো ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং তামাকজনিত রোগে বছরে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থেকে দ্রুত আইন সংশোধনের কোনো বিকল্প নেই।
সাংবাদিক কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) রিজিওনাল ডিরেক্টর সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামস ডা. মাহিন মালিক, বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এনটিভির হেড অব নিউজ জহিরুল আলম, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী, এবং প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
টিআই/কেএ