স্বাস্থ্যখাতে যেমন ভালো দিক আছে, কালো দিকও আছে
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে যেমন কিছু ভালো দিক আছে, তেমনি কিছু কালো দিকও আছে। গত তিন/চার বছর আগে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গত কিছুদিন আগেও যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মানইজ্জত অনেক নিচে নামিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ২৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার ভালো দিক আছে, সবসময় আমরা সেগুলোর মূল্যায়ন করি। তেমনি কিছু খারাপ দিকও আছে, সেই দিকটাও আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আজ যেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এসেছি, সেটিও কিছুদিন আগে নানা বিষয়ে সমালোচিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা তাদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন, সেটি তারা করতেই পারেন, এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আমি উপলব্ধি করেছি এবং দেখেছি যে, কিছু চিকিৎসক দুপুর ১২টার আগেই তাদের প্রাইভেট চেম্বারে চলে যান। কিছুদিন আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন চিকিৎসক অফিস চলাকালে প্রাইভেট চেম্বারে গিয়ে অপারেশন করেছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই রোগীটি মারা যান। আমার কাছে যখন খবরটি এসেছে, আমি তখন লজ্জায় মাথা ওঠাতে পারছিলাম না। এই বিষয়গুলো আমাদেরকে কঠোরভাবে দেখতে হবে।
বিএমএ সভাপতি বলেন, আমি শুনেছি এবং নিজেও দেখেছি... একজন চিকিৎসক রাত ২-৩টা পর্যন্ত চেম্বার করেন। এর পরদিন তিনি কীভাবে আবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেন! সেটি আমার বুঝে আসে না। আমি মনে করি এভাবে ভালো কিছু হতে পারে না।
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা কথা বলেছি। তবে, নতুন মন্ত্রী এসেই উদ্যোগ নিয়েছেন। আশা করছি খুব শিগগিরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এটি দেখবেন এবং আমাদের পরামর্শ নিয়ে আইনটি পাসের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, করোনায় ১৩০ জন চিকিৎসক শহীদ হয়েছেন, এটা আমাদের জন্য গর্বের ব্যাপার। করোনায় আমাদের চিকিৎসকরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। আমাদের চিকিৎসক সমাজ যেভাবে কাজ করেছেন, সেই কারণে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম ছিল। এটি নিয়ে আমরা গর্ব করি। এই গর্বের জায়গাগুলো কিছু মানুষের জন্য নষ্ট হতে পারে না।
গবেষণার বিষয়ে এই চিকিৎসক নেতা বলেন, চিকিৎসকরা গবেষণা করবেন, কিন্তু তাদের তো অসংখ্য সমস্যা আছে। চিকিৎসককে ২০-৩০ হাজার টাকায় চাকরি করে তার পরিবার ও বাবা-মায়ের জন্য ভাবতে হয়। এভাবে গবেষণা হয় না। যে গবেষণা করবেন, সে তার পরিবার ও বাবা-মায়ের কথা চিন্তা করবে না। তাহলেই সেই ব্যক্তি গবেষণায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে পারবে। চিকিৎসকদের সেই ব্যবস্থা করে দিন। মানসম্মত গবেষণা অবশ্যই আসবে।
টিআই/কেএ