দেশে কোভিডের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নতুন জেএন-১ নামক নতুন একটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্সিং করে সর্বমোট তিন জন রোগীর দেহে নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কোভিডের জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত তিন রোগীর মধ্যে একজনের দেশের বাইরে থেকে আসার ইতিহাস রয়েছে। তাদের উপসর্গগুলো অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতোই, যেমন- জ্বর সর্দি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা এবং হালকা গ্রাস্ট্রেইনটেস্পাইনাল লক্ষণ দেখা গিয়েছে। রোগীদের উপসর্গ মৃদু হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব জানার জন্য গবেষণা চালিয়ে যাবার বিকল্প নেই।
গবেষকরা বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে যে, নতুন জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত রোগের লক্ষণের তীব্রতা কম। সব জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত রোগীর কমপক্ষে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া ছিল। তৃতীয়বারের মতো আক্রান্ত হয়েছে এরকম রোগীরও জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। মৃদু উপসর্গের কারণে জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্ট রোগীদের থেকে দ্রুত সংক্রমণ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও গবেষণা প্রধান অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জেএন-১ সাব-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের তুলনামূলক কম উপসর্গ হয় এবং হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা কম। তবে প্রত্যেক করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট বিপজ্জনক এবং তা মারাত্মক অসুস্থতা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। পাশাপাশি ভাইরাসের নিয়মিত মিউটেশন আমাদের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সরকার ইতোমধ্যে আড়াই কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহ নিশ্চিত করেছে। ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে চতুর্থ ডোজ হিসেবে এসব টিকা দেওয়া হবে। তাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে ও টিকা গ্রহণ করতে হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- করোনা জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রধান গবেষক, জেনেটিক্স অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি ও এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. লায়লা আনজুমান বানু। এছাড়া করোনা জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের সাথে যুক্ত গবেষণা টিমের সদস্য ডা. মো. মহিউদ্দিন মাসুম, ডা. শারমিন আক্তার সুমি, ডা. শরদিন্দু কান্তি সিনহা, সোয়েব হোসেন, শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাসসহ যুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গবেষণা টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
টিআই/এমজে