প্রত্যাশার ফুলঝুরি, হাসিমুখেই কেন্দ্র ছাড়লেন পরীক্ষার্থীরা
সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষা শেষে প্রায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই হাসিমুখে কেন্দ্র থেকে বের হতে দেখা যায়। পরীক্ষা কেমন হয়েছে— জানতে চাইলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী জানান ভালো হয়েছে। এ জবাবের পাশাপাশি তাদের প্রত্যাশার ফুলঝুরি ব্যক্ত করতেও দেখা যায়।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী দেশের ১৯টি কেন্দ্রের ৪৪টি ভেন্যুতে একযোগে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন পরীক্ষাকেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিক ১১টা ৫ মিনিট থেকেই পরীক্ষার্থীরা হল থেকে বের হতে শুরু করে। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে— অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ বছর প্রশ্ন মোটামুটি সহজ হয়েছে। এ কারণে কেউ কেউ আবার ভর্তিতে চ্যালেঞ্জও দেখছেন।
মারুফুল ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে— কেউ যদি ভালো করে বুঝেশুনে পরীক্ষা দিতে পারে, অবশ্যই চান্স পাওয়ার মতো মার্ক তুলতে পারবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চান্সের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী।
নারায়ণগঞ্জ থেকে পরীক্ষা দিতে আসা তানজিদা হাসান বলেন, এবারের প্রশ্ন বেশ স্ট্যান্ডার্ড হয়েছে। সবাই সহজ বললেও আমার কাছে মনে হয়েছে প্রশ্ন খুব বেশি সহজও না আবার কঠিনও না। বাসায় গিয়ে ভেবেচিন্তে বলা যাবে মার্ক কেমন পাব। তবে চান্সের ব্যাপারে আমি মোটামুটি আশাবাদী।
আরও পড়ুন
যাত্রাবাড়ী থেকে আসা মো. রহিতুল ইসলাম বলেন, বায়োলজি থেকে কিছু কনফিউজিং প্রশ্ন ছিল, যেগুলো পড়ে মিলাতে একটু বেশি সময় লেগেছে। সবমিলিয়ে প্রশ্ন ভালো হয়েছে। দেখা যাক কী হয়। সবমিলিয়ে কাট মার্ক যদি ভালো হয়, তাহলে চান্সের ব্যাপারে আশাবাদী।
জানা গেছে, ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ৫৩৮০টি আসন এবং বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭টি মেডিকেল কলেজে মোট ৬২৯৫টি আসনের বিপরীতে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০৪টি মেডিকেল কলেজের ১১ হাজার ৬৭৫টি আসনের জন্য এবার ১ লাখ ৪ হাজার ৩৭৪ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেছিলেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
ভর্তি পরীক্ষায় যত নম্বর
লিখিত ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটি ১ নম্বর করে মোট (এইচএসসি বা সমমান সিলেবাস অনুযায়ী) ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক বিভাজন- পদার্থবিদ্যা ২০, রসায়নবিদ্যা ২৫, জীববিজ্ঞান ৩০, ইংরেজি ১৫ ও সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ) নিয়ে ১০টি প্রশ্ন ছিল।
লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি ভুল উত্তর প্রদানের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে অকৃতকার্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের কম পেলে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
এমবিবিএস ও বিডিএসে পাস নম্বর ৪০
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম নম্বর (পাস নম্বর) গতবারের মতো এবারও ৪০ রাখা হয়েছে। মাইগ্রেশনের সময় তিনবার পাবেন শিক্ষার্থীরা। বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য সব কলেজকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা সব কলেজে চয়েজ একবারে দিতে পারবেন, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতেও একই নিয়ম বহাল আছে।
দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কত নম্বর কাটা
২৪ ডিসেম্বরের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা দ্বিতীয়বার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ১০ নম্বর কাটা হবে। এ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় জেলা কোটা বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্ধারিত সময়ে আসন পূরণ করা না গেলে সেসব আসনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।
টিআই/এমজে