ডায়াবেটিসে অকেজো হতে পারে এই তিন অঙ্গ, ভালো থাকতে যা করবেন
সারাবিশ্বে ক্রমশই বাড়ছে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রায় প্রতিনিয়ত প্রচুর সংখ্যক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, যা যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়। এটা এমন একটা সমস্যা, এখনো পর্যন্ত যার কোনো স্থায়ী নিরাময় খুঁজে পাননি গবেষকরা।
আসলে জীবনযাত্রার ওপর নজর না দিলে অন্যান্য রোগ পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি ডায়াবেটিস দেহের একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে নষ্ট করে দিতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অবলম্বন করতে হবে। তাহলেই রক্তে শর্করার সঠিক মাত্রা বজায় রাখা সম্ভব।
তারা বলছেন, ডায়াবেটিসের জেরে চোখ, কিডনি এবং পায়ের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমনকি এই অঙ্গগুলো কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। যেটা অত্যন্ত ভয়ের বিষয়। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে আংশিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁরা কিডনির সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। উচ্চ ব্লাড সুগারের সমস্যা থাকলে কিডনির সঙ্গে সংযুক্ত রক্তবাহী নালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ফুলে যায়। কখনো কখনো ক্রিয়েটিনিন বিপজ্জনক সীমায় পৌঁছে যায়। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কাও।
ডায়াবেটিসে ব্লাড সুগারের মাত্রা দিনের পর দিন ধরে বেশি থাকলে তার থেকে চোখের রোগ হতে পারে। কখনো কখনো রোগী দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলতে পারেন। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। কারণ ডায়াবেটিসের জেরে রেটিনায় অতিরিক্ত পরিমাণে তরল জমা হতে থাকে। এই ধরনের সমস্যা হলে স্পেশালিস্ট ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
ডায়াবেটিসের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে পায়েও। আসলে রোগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগীর পায়ের শিরাগুলো নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। এমনকি ডায়াবেটিসের জেরে পায়ে রক্তবাহী ধমনিগুলো অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এতে পায়ে ব্যথা এমনকি বারবার সংক্রমণ হতে থাকে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধের পাঁচ উপায়
প্রতিদিন হাঁটুন : নগর জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে গেছে। তবে আক্রান্ত হওয়ার আগেই যদি নিয়মিত হাঁটাচলা ও শারীরিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করা যায়।
জীবনধারায় পরিবর্তন আনুন : এই পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়া, নিয়ম মেনে সকালে ঘুম থেকে ওঠা এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়া, যানবাহন ব্যবহার কমিয়ে হাঁটাচলা বাড়ানো, মিষ্টি জাতীয়, ফাস্টফুড ও তৈলাক্ত খাবার পরিহার করা ইত্যাদি।
ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন : শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নয়, আরও অনেক রোগের কারণ হতে পারে ধূমপান ও মদ পানের অভ্যাস।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস ঠেকাতে যেসব খারাপ অভ্যাস সবার আগে বাদ দিতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস। কারণ এগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
মিষ্টি এড়িয়ে চলুন : সাধারণ মিষ্টিজাতীয় খাবার স্থূলতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে কোনোভাবেই অতিরিক্ত ওজন বা মুটিয়ে যাওয়া না হয়। বিশেষজ্ঞরা এজন্য মিষ্টি, ফাস্টফুড, পোলাও, বিরিয়ানি, রেড মিটের মতো ভারী খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।
রক্তে চিনির মাত্রার ওপর নজর রাখুন : চিকিৎসকরা বলছেন, যাদের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের অবশ্যই বছরে একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। এজন্য সবসময় হাসপাতালে যেতে হবে এমন নয়। এখন অনেক ফার্মেসিতে স্বল্পমূল্যে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়। সেখান ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কেএ