ডায়াবেটিসে চোখের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি রেটিনায়
বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তবে আশঙ্কাজনক বিষয় হলো, ডায়াবেটিসের কারণে হার্ট, চোখ এবং কিডনির ওপর বেশি প্রভাব পড়ে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিসের প্রভাবে অন্ধত্ব বরণও করতে পারেন, যাকে বলা হয় ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। ডায়াবেটিস চোখের সব অংশের তুলনায় রেটিনায় বেশি ক্ষতি করে।
রোববার (১২ নভেম্বর) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত ডায়াবেটিস এবং রেটিনা বিষয়ক ‘ডায়াবেটিস অ্যান্ড রেটিনা: বিজ্রিং দ্যা গ্যাপ’ শীর্ষক এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চক্ষু চিকিৎসকরা অবশ্যই সকল রোগীদের প্রথমেই ফান্ডাস ফটোগ্রাফি পরীক্ষা করবেন। এর পরীক্ষার মাধ্যমেই রোগীর ডায়াবেটিস জনিত রোগ বিশেষত ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, ম্যাকুলার অবক্ষয়, গ্লুকোমা এবং অকোলের রেটিনোপ্যাথি সম্পর্কে জানা যাবে।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিসজনিত রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতার জন্য সকল চিকিৎসকদের এগিয়ে আসতে হবে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ে সচেতনতার জন্য প্রতিটি চেম্বারে ব্যানারে, লিফলেট, দেয়াল পত্রিকা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ রোগীরা বিশেষজ্ঞ সেবা নিতে আসলে প্রতিটি চিকিৎসকের চেম্বারে আধাঘণ্টা থেকে শুরু করে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকেন। এসময় তারা ডায়াবেটিস সচেতনতামূলক এসব লিফলেট দেখে রোগীরা কার্যকরভাবে সচেতন হবেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা মুখী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন কারণে ডায়াবেটিসজনিত নানান রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ নানান রোগ প্রতিরোধে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। পৃথিবীতে যেসব কারণে মানুষ অন্ধত্ব হয়, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি তার অন্যতম কারণ।
সেমিনারে বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রাইনোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম ও বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির কার্যকরী সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এসএম আশরাফুজ্জামান ও বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল বাশার শেখ।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির মহাসচিব ডা. শাহ-নূর হাসান। সেমিনারে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে বাংলাদেশ অ্যান্ড্রোক্রাইন সোসাইটির সভাপতি (নির্বাচিত) অধ্যাপক ডা. হাফিজুর রহমান, বারডেম হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ফিরোজ আমিন, বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিহা আফসানা, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির উপদেষ্টা ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ চক্ষু বিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সহযোগী অধ্যাপক ডা.তারেক রেজা আলী।
টিআই/এসকেডি