৬৫ উপজেলায় কমিউনিটি আই সেন্টারের উদ্বোধন
দেশের সাত বিভাগের ২৮ জেলার ৬৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত ৬৫টি কমিউনিটি আই সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়েছে। এনিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২০০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি আই সেন্টার চালু হয়েছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব আই সেন্টারের উদ্বোধন করেন। এসময় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটপ্রান্তে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জানা গেছে, নতুন কমিউনিটি আই সেন্টারগুলোর মধ্যে সিলেট বিভাগে ১৯টি, খুলনা বিভাগে ১৬টি, রাজশাহী বিভাগে ১৫, ময়মনসিংহ বিভাগে ২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২টি, রংপুর ২টি এবং ঢাকা বিভাগে নতুন করে যুক্ত হয়েছে আরও ৯টি কমিউনিটি আই সেন্টার। এসব সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভারী যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ফান্ডাস ক্যামেরা, রেটিনাল লেজার মেশিন, অফথ্যালমিক সার্জিক্যাল মাইক্রোস্কোপ, ফ্যাকো মেশিন, ভিজুয়াল ফিল্ড অ্যানালাইজার, এ স্ক্যান, বি স্ক্যান, ক্যারাটোমিটারসহ অটোরিফ্লাক্টোমিটার, অ্যাপ্লানেশন টোনোমিটারসহ স্লিট ল্যাম্প।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কমিউনিটি আই সেন্টারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় বিনামূল্যে সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া হবে। বেইজ হাসপাতালে (মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) কর্মরত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইন্টারনেট এবং আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে কমিউনিটি আই সেন্টারে আগত রোগীদের সমন্বিত আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেন।
তারা বলেন, এসব কমিউনিটি আই সেন্টার থেকে ছানি, গুকোমা, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, শিশু চক্ষু রোগ, কর্ণিয়াল আলসার সহ অনান্য জটিল চক্ষু রোগ এবং চোখের আঘাত জনিত রোগীকে রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে বেইজ হাসপাতালে উন্নত চক্ষু চিকিৎসা প্রদান করা, ফলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের কর্মপরিধি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং রোগীদের সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হয়েছে।
কমিউনিটি আই সেন্টারের কার্যক্রমের কর্মপদ্ধতি
>আগত রোগীর অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ।
> ডিজিটাল ভিশন চার্টের মাধ্যমে রোগীর দৃষ্টি শক্তি পরীক্ষা।
> স্লিট ল্যাম্প দ্বারা রোগ শনাক্তকরণ।
> অটোরিফ্রাক্টোমিটারের মাধ্যমে চোখের পাওয়ার নির্ণয়।
> চশমার পাওয়ার দেওয়ার পরীক্ষা
> ডিজিটাল ফান্ডাস ক্যামেরার মাধ্যমে রেটিনাসহ চোখের পেছনের অংশের ছবি গ্রহণ।
> অ্যাপ্লানেশন টোনোমিটার দ্বারা চোখের প্রেসার নির্ণয়।
> কমিউনিটি আই সেন্টার হতে বেইজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চক্ষু বিশেষজ্ঞের নিকট অনলাইন সফটওয়্যারের সহায়তায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব তথ্য প্রেরণ ও ভিডিও কনসালটেশনের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ।
> বেইজ হাসপাতাল হতে চক্ষু বিশেষজ্ঞের ই-সাইন যুক্ত ব্যবস্থাপত্র কমিউনিটি আই সেন্টারে প্রেরণ।
> ব্যবস্থাপত্রের প্রিন্টকপি অনুযায়ী অফথ্যালমিক নার্স কর্তৃক কমিউনিটি আই সেন্টার হতে রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ ও পাওয়ার চশমা প্রদান ।
> চোখের ছানি, গ্লুকোমা, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, শিশু চক্ষু রোগসহ অন্যান্য জটিল চক্ষু রোগীদের সনাক্তকরণ এবং বেইজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী বেইজ হাসপাতালে রেফার করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ।
> কমিউনিটি আই সেন্টারে আগত চক্ষু রোগীর ৯০ শতাংশের অধিক রোগীকে স্থানীয়ভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা, ওষুধ ও পাওয়ার চশমা দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে প্রায় ১০ শতাংশ জটিল চক্ষু রোগীকে বেইজ হাসপাতালে রেফার করে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
> বেইজ হাসপাতালে রেফার পরবর্তী চিকিৎসা প্রাপ্ত চক্ষু রোগীদের ফলোআপ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা-বেইজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী কমিউনিটি আই সেন্টার হতে দেওয়া হচ্ছে।
টিআই/এসএম