রক্তবর্ণ মানেই ‘চোখ ওঠা’ নয়, ভুল করলেই হারাতে পারেন দৃষ্টিশক্তি
চোখ হঠাৎ লাল হয়ে রক্তবর্ণ হয়ে গেলে অনেকেই মনে করেন এটা ‘কনজাংটিভাইটিস’ বা ‘চোখ ওঠা’। এরপর নিজেই চিকিৎসক বনে গিয়ে আন্দাজে বা ফার্মেসি থেকে ওষুধ ব্যবহার করেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ভিন্ন কথা। সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গটি নিয়ে আন্দাজে ওষুধ ব্যবহার করা ঠিক নয়। কেননা বড় কোনো ভুল করলেই হারাতে হতে পারে দৃষ্টিশক্তি।
চিকিৎসকরা বলছেন, যদি কারো কনজাংটিভাইটিস হয় তাহলে দুটো চোখই লাল হবে। কিন্তু যদি একটি চোখ লাল হয় এবং চোখে ব্যথা থাকে তাহলে বুঝতে হবে—সমস্যা গুরুতর। এটি হতে পারে ‘ন্যারো অ্যাঙ্গল গ্লকোমা’, ‘আইরাইটিস’ (চোখে বাত) কিংবা শিশুদের অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে কনজাংটিভাইটিসের উপসর্গ বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এতে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড কিনে খাওয়া বা ড্রপ নেন। এই প্রবণতায় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
যদি কারও এক চোখ লাল রক্তবর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া চোখে অসহ্য যন্ত্রণা, পেটে যন্ত্রণা ও বমি হয় তাহলে এটি ‘ন্যারো অ্যাঙ্গল গ্লকোমা’র লক্ষণ। এই রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। চোখ ওঠা মনে করে ভুল করলে দৃষ্টিশক্তি হারাতে হতে পারে।
অপরদিকে অনেক সময় বাচ্চাদের দুচোখ লাল হয়ে চুলকানোর সমস্যা হয়। এটি মূলত অ্যালার্জিক কনজাংটিভাইটিস। তখন চোখ ওঠা ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক যুক্ত ড্রপ ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
চোখের চিকিৎসক সিদ্ধার্থ ঘোষ বলেন, ‘প্রথমে এক চোখ, পরে আরেক চোখ লাল হলে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা। তবে চোখ দিয়ে পানি পড়লে বুঝতে হবে কোনও সংক্রমণ। তখন চিকিৎসককে দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত। চোখের ভুল চিকিৎসা করলে সারা জীবনের মতো দৃষ্টি চলে যেতে পারে। এছাড়া গ্লকোমার চিকিৎসায় দেরি করলে বিপদও হতে পারে।’
চিকিৎসক জ্যোতির্ময় বলেন, ‘কনজাংটিভাইটিস যদি ভাইরাসজনিত হয়, তা হলেও স্টেরয়েডের ব্যবহার কর্নিয়ায় ছাপ ফেলে দেয়। এতে দৃষ্টি ক্ষীণ হতে পারে। তাই রোগ বুঝে ওষুধ দিতে হবে। আর সেটা একমাত্র চিকিৎসকরাই পারবেন।’
সূত্র: আনন্দবাজার
এমএসএ