করোনা বাড়তে থাকায় জনসমাগম বর্জনের পরামর্শ
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ, সামাজিক দূরত্ব বজায়সহ সব ধরনের জনসমাগম বর্জনের কথা বলছে কোভিড সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
বুধবার (১৫ জুন) রাতে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লার সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি কমিটির ৫৮তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়-
১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে পুনরায় উদ্বুদ্ধ করতে গণমাধ্যমে অনুরোধ জানাতে হবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, নো মাস্ক নো সার্ভিস নীতি প্রয়োগ করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম বর্জন করা প্রয়োজন। ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানগুলোতে (যেমন- মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দরকার।
২. যাদের জ্বর, সর্দি, কাশি হচ্ছে তারাও অনেকে কোভিড টেস্ট করেছেন না এতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না এবং এ কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। এ জন্য যাদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এবং যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসছেন, তাদের টেস্ট করার জন্য অনুরোধ করতে হবে।
৩. যে সমস্ত দেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট ও সাব-ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের হার বেশি, সেসব দেশ আসা আক্রান্ত মানুষের মাধ্যমে থেকে আমাদের দেশে ভাইরাসটি প্রবেশ করছে বলে মনে করা হয়। এ জন্য বিমান, স্থল ও নৌবন্দরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ, টিকা সনদ আবশ্যক করতে হবে। বিশেষ করে অধিক আক্রান্ত দেশগুলো হতে আসা যাত্রীদের জন্য।
একইসঙ্গে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করার ব্যবস্থা করতে হবে। সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
৪. কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ যারা এখনো নিতে পারেননি, তাদের এটি নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী করতে হবে। ৫ থেকে ১২ বৎসরের শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে এনআইটিএজির পরামর্শ অনুসরণ করা দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চতুর্থ ডোজ অনুমোদন করলে তা বিবেচনা করতে হবে। কোভিড-১৯ এর ধরন শনাক্ত করার জন্য সম্ভাব্যতা বিবেচনা করা দরকার। ভ্যাকসিন পরবর্তী প্রতিরোধ ক্ষমতা কতদিন বজায় থাকছে সে সম্বন্ধে গবেষণা করা প্রয়োজন।
৫. কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে বিশেষ শয্যা, আইসিইউ ব্যবস্থা ও জনবল ছিল, তা বর্ধিত হারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন।
৬. সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হলে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করা যেতে পারে।
সর্বশেষ গত এক দিনে দেশে ২৩২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশে।
টিআই/আরএইচ