আগে যা ভাবা হতো অ্যালকোহলে হার্টের ক্ষতি তার চেয়েও বেশি
বিভিন্ন দেশে যেটিকে অ্যালকোহল সেবনের সহনীয় মাত্রা বলে এতদিন ধরা হয়েছে, তার সাথে হৃদরোগের একটি সম্পর্ক আছে। ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজির (ইএসসি) সায়েন্টিফিক কংগ্রেস ‘হার্ট ফেলিওর ২০২২’ এ উপস্থাপিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ প্রতিবেদনের লেখক ড. বিথানি ওয়ং বলছেন, অ্যালকোহলের সেবনের বিষয়ে আমাদের যে আরও সতর্ক হতে হবে, এ গবেষণা থেকে আমরা সে ইঙ্গিতই পায়। এ জন্য অ্যালকোহল থেকে হার্টের ক্ষতি কমাতে আমাদের পরামর্শ হলো- কারও যদি অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকে তাহলে তা কমিয়ে আনতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যালকোহল সেবন করা হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে। এ কথা স্বীকৃত যে, দীর্ঘ দিন মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে অ্যালকোহোলিক কার্ডিওমাইওপ্যাথি নামে হৃদরোগ হতে পারে। তবে এশিয়ার মানুষদের নিয়ে চালানো গবেষণায় এখন দেখা যাচ্ছে স্বল্পমাত্রায় অ্যালকোহল সেবনও ক্ষতিকর হতে পারে। যেহেতু এশীয় ও ইউরোপীয়দের মধ্যে জেনেটিক ও পরিবেশগত পার্থক্য আছে তাই ইউরোপীয়দের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে অ্যালকোহলের কারণে কার্ডিয়াক পরিবর্তন হচ্ছে কি না, তা এ গবেষণায় দেখার চেষ্টা করা হয়। এখানে মূল বিষয়টাই হলো অ্যালকোহল, তাই কতটুকু অ্যালকোহল সেবন নিরাপদ সে তথ্যটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চলিশোর্ধ্ব ৭৪৪ জনকে এ গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ৭৪৪ জনের প্রত্যেকে হয় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতার মতো সমস্যার কারণে হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকিতে আছেন নয়তো প্রি-হার্ট ফেলিওর পর্যায়ে আছেন; যাদের হয়তো কিছু অস্বাভাবিকতা আছে কিন্তু কোনো উপসর্গ নেই। যাদের নিয়ে এ গবেষণা চালানো হয়েছে তাদের গড় বয়স ৬৬.৫ বছর এবং তাদের ৫৩ শতাংশ নারী।
আগে অ্যালকোহল সেবন করতেন এখন করেন না বা হার্ট ফেলিওর রোগীদের মধ্যে যাদের উপসর্গ (শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, ক্লান্তি, ব্যয়াম করার শক্তি কমে আসা) রয়েছে তাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
গবেষকরা অ্যালকোহল সেবন ও হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করেন।
ড. ওয়ং বলছেন, আমাদের গবেষণা বলছে, সপ্তাহে ৭০ গ্রামের বেশি অ্যালকোহল সেবন ইউরোপীয়দের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্বল্পমাত্রার অ্যালকোহল সেবনের কোনো উপকারিতা আমরা পাইনি। প্রি-হার্ট ফেলিওর রোগীদের জন্য অ্যালকোহল সেবনের সহনীয় মাত্রা আরও কমাতে সরকারগুলোর কাজ করা উচিত।
সূত্র : সায়েন্স ডেইলি।
এনএফ