রোগী কমলেও স্বাভাবিক হয়নি ডায়রিয়া পরিস্থিতি
রাজধানী ও আশপাশের এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে রোগী ভর্তির চাপ তুলনামূলক কমে এসেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোগীর সংখ্যা কমলেও এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি ডায়রিয়া পরিস্থিতি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টা পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তিন শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছিলেন ৮৩৯ জনের মতো। গত বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভর্তি হয়েছিলেন ৯১৬ জন।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মহাখালীর আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
জানা গেছে, মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। গত ১৬ মার্চ প্রথম এক হাজার ৫৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির খবর জানিয়েছিল আইসিডিডিআরবি। এর পরদিনই (১৭ মার্চ) আরও এক হাজার ১৪১ জন রোগী ভর্তি হন। এরপর রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে। গত ৪ এপ্রিল রেকর্ডসংখ্যক ১ হাজার ৩৮৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন।
৮ এপ্রিলের পর থেকে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তির সংখ্যা কিছুটা কমতে থাকে। এরপর ১৪ এপ্রিল দীর্ঘ এক মাস দৈনিক রোগী ভর্তির সংখ্যা এক হাজারের নিচে নেমে আসে।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েনটিস্ট ডা. শোয়েব বিন ইসলাম বলেন, রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। গতকাল (শুক্রবার) ৮৩৯ জন ভর্তি হয়। যদিও সংখ্যাটি একেবারে কম নয়, তারপরও শুরুতে যে হারে বেড়ে গিয়েছিল সেই তুলনায় এখন অনেকটাই কমে এসেছে।
তিনি বলেন, রোগী কমলেও সংখ্যাটি কিন্তু এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। রোগীর সংখ্যা যদি পাঁচশর নিচে আসে, তাহলে আমরা বলি যে কমেছে।
কোন বয়সী রোগীরা বেশি আসছে— জানতে চাইলে ডা. শোয়েব বলেন, এখন সব বয়সী রোগীরাই আসছে। এখনো তীব্র পানিশূন্যতা নিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের মতো রোগী আসছে। তবে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তারা চিকিৎসার মাধ্যমে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছেন। এরপর তাদের অনেকেই ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় চলে যান এবং সেখানে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
ডায়রিয়া রোগের কারণ প্রসঙ্গে এই চিকিৎসক বলেন, এবারের ডায়রিয়াটা অবশ্যই পানিবাহিত রোগ। আমাদের এখানে যারা আসছে, তাদের সবাই বলছে যে তাদের এলাকায় পানির সমস্যা আছে। দূষিত পানির কারণে শুধু কলেরা নয়, আরও বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে টাইফয়েড রোগটাও বেশ দেখা যাচ্ছে। আমরা ভয় করছি যে মানুষের মধ্যে হেপাটাইটিস-বি বা সি দেখা দেয় কি না। এজন্য শুধু আক্রান্ত এলাকা নয়, এই মুহূর্তে সবারই উচিত পানি ফুটিয়ে খাওয়া।
করণীয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমত যেসব এলাকায় লাইনের কারণে পানির সমস্যা হচ্ছে, সেটা দ্রুত সমাধান করতে হবে। দ্বিতীয়ত হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। করোনার সময় আমরা বেশি বেশি হাত ধুয়েছি, এখন তো আমরা প্রায় সেটি ভুলেই গেছি। এদিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।
টিআই/এসএসএইচ/জেএস