সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বসছে বইমেলা
বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যগত অংশ হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে জাগ্রত রাখার জন্য মাসব্যাপী এ বইমেলার আয়োজন করা হয়। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকা ঘিরে ‘সাংস্কৃতিক বলয়’ তৈরির প্রকল্পকে সামনে রেখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন নিয়ে আপত্তি জানায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
সেই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বর মাসে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাংলা একাডেমিকে চিঠি দিয়ে জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই ‘অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫’ আয়োজন করতে হবে। তবে, শেষ পর্যন্ত তারা এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। ইতোমধ্যে বইমেলার আয়োজনে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলা একাডেমি।
আরও পড়ুন
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হবে বইমেলা
গত বছরের ৬ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতেই অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ এর জন্য বাংলা একাডেমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পাচ্ছে না বলে জানানো হয়।
মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অধিশাখা- ৩ এর উপসচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক চিঠিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ এর আয়োজন করতে হবে।
মেলার স্থান নিয়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে তখন বইমেলার আয়োজন ঠিক কোথায় হবে— এটি নিয়ে বেশ শঙ্কা তৈরি হয়।
বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজমের বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাইব বইমেলা যেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হয়। সে জন্য আমরা আবারও চেষ্টা করব। অবশ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একুশে বইমেলার অনুমতি দেয়নি গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়া বইমেলা জমবে না— এটার অনুমতি নিতে হবে। সে জন্য আবার বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করতে চাই।’
আরও পড়ুন
একাডেমির মহাপরিচালকের এমন মনোভাবে পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত পাল্টে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বইমেলার আয়োজনের অনুমতি দেয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রথমে যে অনাপত্তি দিয়েছিল সেটির ভিত্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করা যাবে না— এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে, পরবর্তীতে বাংলা একাডেমির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যানের যে জায়গাটুকু বইমেলায় ব্যবহার করা হয় সেটুকু শর্ত-সাপেক্ষে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
৩ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে চলছে বইমেলার আয়োজনের কাজ : সদস্য সচিব
তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে আসন্ন অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ এর আয়োজন করা হচ্ছে— বলে জানিয়েছেন বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল সেটির সমাধান হয়ে গেছে। আমরা ওখানেই বইমেলার আয়োজন করব। গত বছর যে পরিসরে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবারও একই পরিসরে মেলা করার জন্য প্রস্তুতি চলছে। আমরা মেলাকে একেবারে সুশৃঙ্খল ও নান্দনিক রাখতে চাই। একই সঙ্গে বইমেলায় যেন নীতিমালাবিরোধী কোনো কাজ না হয় সে বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করব।
স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দে ব্যক্তিগত, প্রতিষ্ঠান-কেন্দ্রিক কিংবা কোনো ধরনের তদবির এ বছর গ্রহণযোগ্য হবে না— জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা নীতিমালার আলোকে স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। নীতিমালা বাস্তবায়ন করার জন্য বইমেলা পরিচালনা কমিটি আছে। সেই কমিটি এবং সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। এবার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের সুযোগ নেই।
কবে নাগাদ বইমেলার দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু হবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বইমেলা আয়োজনের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ফরম বিক্রির কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই বইমেলার কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন
এবারের বইমেলা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে : বাংলা একাডেমির সভাপতি
অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বইমেলা ভিন্ন আঙ্গিকে এবং নতুন উদ্যমে শুরু হবে— এমন মন্তব্য করেছেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ‘গত ১০-১৫ বছর ধরে বইমেলা সংকীর্ণ ও দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়েছে। মেলার আয়োজন, ভাড়া ইত্যাদি বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পেয়েছে। এবার আমরা কোনো পক্ষ অবলম্বন না করে সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে কাজ করব। আশা করছি আগের চেয়ে এবারের বইমেলা অনেক ভিন্ন ও সুন্দর হবে।’
তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে সরিয়ে নেওয়ার একটি তর্ক কেউ কেউ তুলেছেন। তবে, সেটি সম্ভব নয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বইমেলার আয়োজন করার প্রস্তুতি চলছে। আসলে মানুষ একটি ভিন্ন আঙ্গিকে এবারের বইমেলা চাচ্ছে এবং প্রকাশকদের মধ্যেও সেই তাগিদ আছে। সবকিছু বিবেচনা করে কমিটি সব কাজ করবে। আমরা সবাই চেষ্টা করছি যেন বইমেলার আয়োজন আগের চেয়ে অনেক ভালো ও সুন্দর হয়।
বৃহৎ আয়োজনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ কবে নাগাদ শুরু হতে পারে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেলার আয়োজনের পেছনে অনেক কাজ থাকে, সেগুলো শুরু হয়েছে। দৃশ্যমান কাজগুলো নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকেই বইমেলার কার্যক্রম শুরু হয়। এবারও তেমনটি হবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা পূর্ণাঙ্গ আয়োজন সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।
চলছে স্টল বরাদ্দের আবেদন
বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার স্টল বরাদ্দের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। সম্প্রতি অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ এ অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী প্রকৃত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টলের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে। আবেদনপত্র অনলাইনে www.ba21bookfair.com- এ ওয়েবসাইটে পূরণ করা যাবে।
এতে বলা হয়েছে, পুরোনো (২০২৪ সালের বইমেলায় অংশগ্রহণকারী) যে সব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পূর্বের আকারের (১, ২, ৩ ও ৪ ইউনিটের স্টল বা প্যাভিলিয়ন) স্টল পেতে আগ্রহী, তারা অনলাইনে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ, লেখকের সঙ্গে সম্পাদিত সর্বশেষ একটি চুক্তিপত্রের প্রথম ও শেষ পাতা, লেখককে প্রদত্ত সম্মানীর সাম্প্রতিক প্রমাণক, আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরে গ্রন্থ জমা প্রদানের রশিদ/প্রত্যয়নপত্র এবং অগ্নি-সাইক্লোন বীমার প্রমাণক আপলোড করবেন।
এ ছাড়া নতুন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অথবা যে সব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পূর্বের আকার থেকে বর্ধিত স্টল বা প্যাভিলিয়ন পেতে আগ্রহী, সে সব প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি থেকে তথ্য ফরম বা আবেদনপত্র সংগ্রহ ও পূরণ করে উপযুক্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাদি-সংবলিত আবেদন প্রকাশিত বইসহ জমা দিতে হবে।
বাংলা একাডেমি বলছে, নতুন আবেদনকারীকে পৃথক আবেদন ফরমে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ, লেখকের সঙ্গে সম্পাদিত সর্বশেষ একটি চুক্তিপত্রের প্রথম ও শেষ পাতা, লেখককে প্রদত্ত সম্মানীর সাম্প্রতিক প্রমাণক এবং আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরে গ্রন্থ জমা প্রদানের রশিদ বা প্রত্যয়নপত্র, অক্টোবর ২০২৪ এর মধ্যে প্রকাশিত কমপক্ষে ২৫/৩০টি মানসম্মত বই একাডেমিতে জমা দিতে হবে। বইয়ের মান ও অন্যান্য কাগজ/দলিল যাচাই শেষে স্টল বরাদ্দের ব্যাপারে বইমেলা পরিচালনা কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দিতে অপারগ প্রতিষ্ঠান চাইলে একাডেমির ড. মুহম্মদ এনামুল হক ভবনে সরাসরি আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে। সরাসরি আবেদনপত্র (বই ও অন্যান্য কাগজ/দলিলসহ) ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি (ছুটির দিনসহ) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। এরপর কোনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না। অনলাইনে বা সরাসরি প্রাপ্ত আবেদনপত্র অমর একুশে বইমেলা, ২০২৫ পরিচালনা কমিটি যাচাই-বাছাই করে ৯ জানুয়ারি অনলাইনে প্রকাশ করবে।
এ ছাড়া বরাদ্দপ্রাপ্ত স্টলের ভাড়া ব্যাংকে জমা দিয়ে জমার রশিদ ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আপলোড করতে হবে। এক কপি প্রতিষ্ঠানের নামসহ একাডেমির বিক্রয় ও বিপণন উপবিভাগে জমা দিতে হবে। যে সব প্রতিষ্ঠানের স্টলভাড়া উপযুক্ত সময়ের মধ্যে জমা হবে না, সে সব প্রতিষ্ঠানের নাম লটারির তালিকার বাইরে থাকবে।
ভাড়াবাবদ প্রদেয় টাকা অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির যে কোনো অনলাইন শাখা থেকে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি, বাংলা একাডেমি শাখার ‘বাংলা একাডেমি অমর একুশে গ্রন্থমেলা সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০২০০০১৪০৪৯২৩১’ এ জমা দিতে হবে। টাকা জমা রশিদে প্রতিষ্ঠানের নাম ও অনলাইন রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকা অপরিহার্য।
অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’- এর নীতিমালা ও নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে। এ নীতিমালা ও নিয়মাবলি ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে বলেও জানানো হয়েছে।
৫২ বছর ধরে চলছে বইমেলা, ছোট্ট উদ্যোগ পরিণত হয়েছে মহীরুহে
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে জাগ্রত রাখা এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য এ মেলার আয়োজন শুরু হয়। যার শুরুটা হয় ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরে। তিনিই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গণে বইমেলার গোড়াপত্তন করেন। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি একাই বইমেলা চালিয়ে যান। ১৯৭৬ সালে অন্যরাও এ মেলার ব্যাপারে অণুপ্রাণিত হন। ১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে মেলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করেন। ১৯৭৯ সালে মেলার সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি। অবশ্য এটিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চিত্তরঞ্জন সাহা।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে কাজী মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে বাংলা একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন করেন। কিন্তু স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষা ভবনের সামনে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে ট্রাক তুলে দিলে দুজন ছাত্র নিহত হন। ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর সেই বছর আর বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। ১৯৮৪ সালে সাড়ম্বরে বর্তমানের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়। সেই ৩২টি বইয়ের ক্ষুদ্র মেলা সময়ের পরিক্রমায় বাঙালির সবচেয়ে স্বনামধন্য বইমেলায় পরিণত হয়েছে।
পরবর্তীতে বাংলা একাডেমি চত্বরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারণ করা হয়। বইমেলায় কবিতা, উপন্যাস, গল্প, রচনা, ইতিহাস, বিজ্ঞান, মৌলিক বিজ্ঞান, বিভিন্ন ভাষায় বই ও সংস্কৃতির ওপর বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যায়। বর্তমানে এটি শুধুমাত্র বই কেনা-বেচার জায়গা নয়, বরং সাহিত্যপ্রেমী ও সংস্কৃতিমনা মানুষের মিলনস্থল।
সাংস্কৃতিক বলয় বলতে যা বুঝানো হচ্ছে
বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূল, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট ও শিল্পকলা একাডেমি এলাকা নিয়ে রাজধানীতে একটি সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
জানা গেছে, সাংস্কৃতিক বলয় বলতে এক ধরনের সাংস্কৃতিক মিলনস্থল বা সাংস্কৃতিক-কেন্দ্রের ধারণা বোঝানো হচ্ছে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, সাহিত্য আড্ডা, শিল্পকলা, সংগীত, নৃত্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হবে। তাই এ সব স্থানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একটি পূর্ণাঙ্গ পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক জ্ঞান ও আগ্রহের বিস্তার ঘটানোর জন্য সামাজিকভাবে একত্রিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার বৃহৎ কার্যক্রম ঠাঁই পেয়েছে সাংস্কৃতিক বলয় পরিকল্পনায়।
আরএইচটি/এমএআর/এমজে