‘প্রিয়াঙ্কা-নিককে আক্রমণ করতে সারোগেসি নিয়ে মন্তব্য করিনি’
সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দেওয়ায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাসকে আক্রমণ করেননি। তাদের কটাক্ষও করেননি। সারোগেসি নিয়ে শুধুমাত্র নিজের মন্তব্য করেছেন। এমনটাই দাবি করেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কাকে কটাক্ষ করা তো দূরের কথা, উল্টে বরাবরই তার প্রশংসক আমি। প্রিয়াঙ্কার একটি পুরনো টুইট তুলে ধরে তার মন্তব্যের সপক্ষেও যুক্তি দিয়েছেন তসলিমা।
সোমবার ফেসবুকে তসলিমা লিখেছেন, ‘সারোগেসি নিয়ে যেই না নিজের মত প্রকাশ করেছি, অমনি পঙ্গপালের মতো আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো তারা, যারা মেয়েদের শরীরকে পণ্য ভেবে অভ্যস্ত। মেয়েদের অসহায়ত্বের সুযোগে কিনে বা ভাড়া নিয়ে তাদের যৌনাঙ্গ এবং জরায়ু দখল করতে, সে সবে হামলা করতে তারা দ্বিধা করে না। সারোগেসি নিয়ে বিতর্ক করো, কেন এটিকে সমর্থন করছো।’
অর্থের বিনিময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা সারোগেট মা হন, সেসব নারীরা কোন পরিস্থিতিতে এ কাজ করেন, তা ভেবে দেখা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
তসলিমার মতে, যে সমাজ নিজেদের স্বার্থে যৌনকর্মকে জিইয়ে রাখতে চায়, সে সমাজই সারোগেসিকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে। তার মন্তব্য, ‘কেন আমার যুক্তি মানছো না বলো। তারা যুক্তি খণ্ডন করবে না, তারা গালি দেবে। সবারই এক মত, একটি মেয়ের যদি খুব সন্তানের শখ, নিজে যেকোনো কারণেই হোক সন্তান জন্ম দিতে পারছে না, সে তো সারোগেসির মাধ্যমে শখ পূরণ করতে পারছে।’
কাউকে দেখলাম না সারোগেট নারীটির কথা ভাবতে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু টাকার জন্য সে কেন বাধ্য হচ্ছে ন’মাস সাত দিন অন্যের সন্তানকে গর্ভে বহন করতে, জন্ম দান করতে! তার যদি যথেষ্ট টাকা পয়সা থাকতো, তাহলে কী সে এই কাজটি করতো? না, করতো না। তাহলে কী কারণে সারোগেসির প্রশংসা করা হচ্ছে! যে সমাজ পতিতাবৃত্তি টিকিয়ে রাখতে চায়, সে সমাজ তো সারোগেসি টিকিয়ে রাখতে চাইবেই।’
সন্তান ধারণের নতুন পন্থা সারোগেসি। এই প্রক্রিয়ায় অন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া করে মা হতে পারেন কেউ। সম্প্রতি সারোগেসির মাধ্যমে মা হয়েছেন আন্তর্জাতিক তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ও তার স্বামী নিক জোনাস সুখবরটি প্রকাশ করেন।
এদিকে প্রিয়াঙ্কার মা হওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না লেখিকা তসলিমা নাসরিন। কেবল প্রিয়াঙ্কা নয়, সারোগেসি বিষয়টিকেই সমর্থন দিতে নারাজ তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরেন এই নির্বাসিত লেখিকা।
এমএইচএস