একুশে পদকজয়ী শিল্পী শবনম মুশতারীর খোঁজ নেয় না কেউ
নজরুল সংগীতের গুণী শিল্পী শবনম মুশতারী শয্যাশায়ী। দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন নানা অসুখে। কিন্তু রাষ্ট্র কিংবা সংগীতাঙ্গনের কেউই তার খোঁজ নেয় না। নীরবে-নিভৃতে অসুস্থতার সঙ্গে লড়ছেন তিনি।
জানা গেছে, শবনম মুশতারীর স্মৃতিবিভ্রম হয়েছে। তিনি সেভাবে কাউকে চিনতে পারছেন না। কথাও বলতে পারছেন না। মাস তিনেক আগে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর থেকে বাসায় নার্স রেখে চিকিৎসা চলছে।
এসব তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে শবনম মুশতারীর বোন কণ্ঠশিল্পী ইয়াসমিন মুশতারীর মাধ্যমে। গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘সম্প্রতি আপার জন্মদিনে তার এক বান্ধবী কিছু ছবি তোলেন যা ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সেখান থেকে এখন সবাই জানতে পারছেন তার অসুখের বিষয়টা। কিন্তু তার আগে কি উচিত ছিল না শিল্পীর সম্পর্কে একটু খবর নেওয়া?’
আক্ষেপ প্রকাশ করে ইয়াসমিন মুশতারী আরও বলেন, ‘একটা মানুষ এতদিন ধরে যে কোনো খবরে নেই, তাকে তো কেউ মিস করেনি। দেশের একজন জ্যেষ্ঠ শিল্পী, একুশে পদক পাওয়া। তার খোঁজ কি রাখবে না কেউ? সিনিয়রদের প্রতি রাষ্ট্রের কোনো আগ্রহ থাকবে না?’
শবনম মুশতারীর অসুস্থতা সম্পর্কে তিনি জানান, দুই বছর আগে তার ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে। এরপর গত বছর জন্মদিনে স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তখন থেকেই ভুলে যাওয়ার সমস্যাটা জোরালো হয়।
সরকার কিংবা রাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো অনুদান কিংবা সাহায্য চায় না শবনম মুশতারীর পরিবার। তাদের কেবল প্রত্যাশা, গুণী এই শিল্পীর প্রতি একটু যত্নশীল হোক রাষ্ট্র। চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করুক।
উল্লেখ্য, নওগাঁয় জন্ম নেওয়া শবনম মুশতারীর সংগীত জীবন শুরু হয় ষাটের দশকে। আধুনিক ও নজরুলসংগীত মিলিয়ে তার ১০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘লাইলী তোমার এসেছে ফিরিয়া’, ‘বেস্ট অব শবনম মুশতারী’, ‘প্রিয় কবির প্রিয় গান’, ‘প্রিয় এমন রাত’ প্রভৃতি। ১৯৯৭ সালে তিনি সংগীতে একুশে পদক লাভ করেন।
কেআই