দর্শকদের প্রত্যাশা বেশি, এটাই ভয়: ঐশী
ঢাকায় এসেছিলেন মূলত ইংরেজির ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে। কারণ তার উদ্দেশ্য ছিল বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা করা। কিন্তু শখের বশে অংশ নেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায়। সৌন্দর্য আর বুদ্ধিমত্তায় বিচারকদের মুগ্ধ করে তিনি হয়ে যান বিজয়ী। এরপর তার নামটি জেনে গেছেন শোবিজপ্রিয় সবাই। তিনি জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী।
বাংলাদেশের হয়ে মিস ওয়ার্ল্ড-এ প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। সেরা ৩০ জন প্রতিযোগীর তালিকায় পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন। এরপর দেশে ফিরে জড়িয়ে পড়েন শোবিজ কেন্দ্রিক কাজে। তবে ক্যারিয়ারের শুরুতেই দারুণ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন ঐশী। ভেবে-চিন্তে নাম লিখিয়েছেন সিনেমায়। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। বহুল আলোচিত এই সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভর সঙ্গে। আগামী ৩ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
সম্প্রতি ঐশী শুটিং করে এসেছেন ‘নূর’ সিনেমার। তরুণ-আলোচিত নির্মাতা রায়হান রাফির নির্দেশনায় এখানেও তার নায়ক আরিফিন শুভ। গত সেপ্টেম্বরে পাবনায় হয়েছে সিনেমাটির চিত্রায়ন। ঢাকা পোস্ট-এর সঙ্গে একান্ত আলাপে ঐশী বললেন, ‘সিনেমাটির বেশিরভাগ শুটিং শেষ হয়েছে। অল্প একটু বাকি আছে। তবে আমরা আপাতত বিরতিতে আছি। আসলে আমি কিছুটা অসুস্থ, টিমের বাকিরাও ক্লান্ত। তাই কয়েক দিনের বিশ্রাম কিংবা পরবর্তী শুটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
‘মিশন এক্সট্রিম’-এ পুলিশের দুর্ধর্ষ অভিযানের গল্পে শুভর সঙ্গী হয়েছেন ঐশী। এবার ‘নূর’-এ মফস্বলের গল্পে রসায়নে মজেছেন। সব মিলিয়ে শুভর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? জবাবে ঐশী বলেন, ‘শুভ ভাইয়ার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সবসময়ই দারুণ। আমি প্রায়ই বলি, তাকে সহশিল্পী হিসেবে পেয়ে আমি ধন্য। তিনি কাজের প্রতি অত্যন্ত সৎ এবং একাগ্র একজন মানুষ। এজন্য তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হই।’
বাদ গেল না নির্মাতা রাফির প্রসঙ্গও। যাকে এ প্রজন্মের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় নির্মাতা হিসেবে মনে করেন দর্শকরা। তার সঙ্গে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে ঐশী বলেন, ‘তিনি খুব গোছানো এবং বোঝার মানুষ। শুটিংয়ের সময় কোনো দৃশ্য বুঝতে না পারলে, কোনো সমস্যা হলে তিনি সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেন। আর্টিস্টদের পর্যাপ্ত সময় দেন। হুট করেই শট রেডি করে ফেলেন না।’
পাবনায় থাকতেই আরও একাধিক সিনেমায় কাজের প্রস্তাব পেয়ছেন ঐশী। কিন্তু এখনই নতুন কোনো সিনেমায় যুক্ত হতে চান না। মেধাবী এ অভিনেত্রী বলেন, “আসলে ‘নূর’-এর শিডিউলের সঙ্গে মিলে যায় বিধায় একটি সিনেমার কাজ ফিরিয়ে দিয়েছি। আরও দুটি সিনেমার ব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে আমি ঢাকায় আসার পর অসুস্থ থাকায় সেটা নিয়ে বসা হয়নি। তাছাড়া ‘নূর’ শেষ হওয়ার আগে অন্য সিনেমায় কাজ করতেও চাই না। কারণ আমি অতোটা দক্ষ অভিনেত্রী না। ভালো অভিনেত্রীরা একসঙ্গে তিন-চারটে সিনেমার কাজ করতে পারেন। সকালে এক সিনেমার শুটিং করে বিকালে আবার আরেক সিনেমার সেটে হাজির হতে পারেন। আমার ভেতরে ওই ধরণের পরিপক্বতা এখনো আসেনি। তাই একটু সময় নিচ্ছি আরকি।”
এদিকে ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর পর আরও দুটি সিনেমার কাজ সম্পন্ন করেছেন ঐশী। সেগুলো হলো আবু তাওহীদ হিরণ পরিচালিত ‘আদম’ ও মীর সাব্বিরের নির্মাণে ‘রাতজাগা ফুল’। ঐশী জানালেন, ‘আদম’ সিনেমার শুটিং শেষ। এখন গান ও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। সেটা শেষ হলেই মুক্তি পাবে। আর সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘রাতজাগা ফুল’-এর কাজ পুরোপুরি শেষ। অচিরেই পর্দায় আসবে।
ঐশীকে এখনো সিনেমার পর্দায় দেখা যায়নি। এরপরও তাকে ঘিরে দর্শকদের মনে আগ্রহ রয়েছে। সিনেমা সংশ্লিষ্টদের চোখেও তিনি সম্ভাবনাময়ী। এ কারণে কিছুটা ভয়ও পাচ্ছেন তিনি। বললেন, ‘দর্শকরা ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন, এটাই তো ভয়। কারণ যদি তাদের আশাহত করি, তাহলে প্রেশারটা আমার ওপরেই পড়বে। তাই আগে সিনেমাগুলো এক এক করে মুক্তি পাক। দেখা যাক দর্শকরা কীভাবে নেন আমাকে।’
ভবিষ্যতের ভাবনা নিয়ে ঐশীর ভাষ্য, ‘সুন্দর গল্পে কাজ করতে চাই। আসলে প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী সফল হতে চান, ভালো কাজ করতে চান। তবে পার্থক্য হলো রুচি, পছন্দ ভিন্ন। আমি নিজের পছন্দের সিনেমা করতে চাই। আর যেগুলো করব, সেটা যেন সফল হয়, এটাই চাওয়া।’
কেআই