তরুণ নির্মাতাদের অনেক বড় অনুপ্রেরণা সত্যজিৎ রায় : শর্মিলা ঠাকুর
বাংলা ভাষার সিনেমাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচয় করে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। যার হাতে উঠেছিল বিশ্ব চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার ‘অস্কার’। তার জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘অপুর সংসার’। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এই সিনেমা দিয়ে সেলুলয়েড জগতে পা রাখেন অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।
যার হাত ধরে অভিনয়জীবন শুরু, তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণের সুযোগ হাতছাড়া করেন না তিনি। তাই তো ‘ঊনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এর এক সেমিনারে প্রিয় নির্মাতাকে নিয়ে কথা বলতে ভার্চুয়ালি অংশ নেন শর্মিলা ঠাকুর। সত্যজিৎ রায়ের শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই সেমিনার আয়োজিত হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ২০ জানুয়ারি (বুধবার) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ‘সত্যজিৎ রায়: জাতীয় নাকি বৈশ্বিক’ শীর্ষক এই সেমিনার। সেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শর্মিলা ঠাকুর বলেন, ‘সত্যজিৎ রায় চাইলে বিদেশি ভাষায় সিনেমা নির্মাণ করতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। বাংলা ভাষাকেই আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে নিয়ে গেছেন।’
শর্মিলা ঠাকুর আরও বলেন, ‘রায় সাহেব অতটা অবস্থাসম্পন্ন ছিলেন না তখন। তেমন অর্থকড়ি ছিল না, দুই থেকে তিনবারের বেশি একটা শট নেয়ার সুযোগ ছিল না। সেই অবস্থা থেকে বিশ্ব-দরবারে জননন্দিত হয়ে ওঠার পেছনে শ্রম ও মেধার অবদানই বেশি। তরুণ নির্মাতাদের অনেক বড় অনুপ্রেরণা সত্যজিৎ রায়।’
কলকাতা থেকে অনলাইনে সেমিনারে আরও যোগ দেন বর্ষীয়ান অভিনেতা ধৃতিমান চ্যাটার্জি। তিনি সত্যজিত রায়কে নিয়ে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায় বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনের এক দৃষ্টান্ত। তিনি নির্দিষ্ট কোনো জাতিসত্তার নয়। তিনি সিনেমায় রাজনীতিকে জীবন ঘনিষ্ট করে উপস্থাপন করতে পেরেছেন।’
সেমিনারের সভাপতি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। সত্যজিৎ রায়কে তার অভিজ্ঞতার কথাও জানান। আর সবার মত ‘পথের পাঁচালী’ তাকেও বেশ নাড়া দিয়েছে। এজন্য ১৯৬৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মহানগর’ সিনেমাটি দেখতে ৩৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নীলফামারি থেকে ঢাকা এসেছিলেন তিনি।
আসাদুজ্জামান নূর আরও জানান, ঢাকার পল্টন ময়দানে ১৯৭২ সালে এসেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তাঁকে দেখতে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমেছিল সেখানে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাঁকে বেশ সম্মান করেছিলেন।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। এছাড়া সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র জীবন, জাতীয় ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলেন বিচারপতি রিফাত চৌধুরী ও চলচ্চিত্র সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ।
এমআরএম