‘কতবার যে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছি’
সদ্যপ্রয়াত বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমারকে নিয়ে চারিদিকে চলছে চর্চা। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দেখানো হচ্ছে তার ছবি। এ ‘ট্র্যাজিডি কিং’কে নিয়ে স্মৃতিচারণ করলেন বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। দিলীপ কুমারের ‘দেবদাস’ সিনেমাটি তিনি অনেকবার দেখেছেন বলে জানালেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তসলিমা লিখেছেন, দিলীপ কুমারের সম্মানে তার একটি ছবি দেখার ইচ্ছে হলো, কোনটা দেখব কোনটা দেখব ভাবতে ভাবতেই স্থির করলাম দেবদাস ‘দেবদাস’। দেখা- ছবিই আবার দেখব, যেমন পড়া-বই আবার পড়তাম।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘দেবদাস’ শব্দটি উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গেই আমি চলে যাই আমার বারো তেরো বছর বয়সে। কতবার যে তখন ‘দেবদাস’ পড়েছি, কতবার যে পড়তে পড়তে সারারাত পার করেছি, কতবার যে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজিয়েছি, তার সংখ্যা আমার জানা নেই।
পাশাপাশি তসলিমা লিখেছেন, আমার দাদা প্রায়ই আমাকে বই উপহার দিত। শরৎ রচনাবলী, রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ, ছিন্নপত্র, শেষের কবিতা, চোখের বালি, নজরুলের সঞ্চিতা, রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা, বঙ্কিম রচনাবলী, শরদিন্দু অমনিবাস, পথের পাঁচালি-- এসব আমি ইস্কুল জীবনেই পড়ে শেষ করেছি। স্কুলের লাইব্রেরির বইগুলোও গোগ্রাসে পড়েছি। তখন যে বই-ই পেতাম, পড়তাম। নীহাররঞ্জন গুপ্ত, ফাল্গুনি মুখোপাধ্যায়, দস্যু বনহুর- কিছুই ছাড়িনি।
তিনি লিখেন, ‘দেবদাস’ ছবিটি যারা দেখেছে, যারা বইটি পড়েনি, তাদের জন্য আমি গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। কৈশোরে বা কৈশোরোত্তীর্ণ বয়সে যারা রাতে রাতে দেবদাস পড়ে কেঁদে বুক ভাসায়নি, তারা কী বুঝবে দেবদাসের! এখন না হয় দেবদাসকে মনে হয় ‘চিক ফ্লিক’। কিন্তু তখন? লেখাটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর কমেন্ট বক্স উপচে পড়ছে নানা মন্তব্যে।